প্রকাশিত: মে ৮, ২০২১, ০৭:৪২ পিএম
বাংলাদেশের
জনসংখ্যার ৭ শতাংশ অর্থাৎ
প্রায় ১ কোটি ১০
লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে
৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া
রোগীরা প্রতি মাসে এক থেকে
দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে
বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে
এ রোগীরা রক্তশূন্যতায় মারা যায় বলে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
দেশের
এ অবস্থায় আজ ৮ মে
যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য
‘অনাগত সন্তানকে দিতে থ্যালাসেমিয়া থেকে
সুরক্ষা, বিয়ের আগে করুন রক্তের
ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষা।’
সচেতনতার
অভাবে জিনগত রক্তরোগ ‘থ্যালাসেমিয়া’ দেশে
নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে দেড় কোটিরও
বেশি মানুষ এ রোগের বাহক।
এখনও এ রোগটি সম্পর্কে
সাধারণ মানুষের ধারণা কম। শুধু অসচেতনতার
কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭
থেকে ১০ হাজার শিশু
থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ
করে।
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ডা.
মীর্জা নাহিদা হোসেন বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্ত
সংক্রান্ত রোগ। এ রোগের
কোনো সহজলভ্য স্থায়ী চিকিৎসা বা টিকা নেই।
এ থেকে মুক্তির একমাত্র
উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক
হন, শুধু তখনই সন্তানদের
এ রোগ হতে পারে।
সচেতনতা বাড়িয়ে প্রতিরোধই এ রোগ থেকে
বাঁচার একমাত্র পথ। জিনগত ত্রুটির
কারণে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর দেহে লোহিত রক্তকণিকা
ঠিকমতো তৈরি হয় না।
ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়।
করোনা
অতিমারির এই সময়ে অনলাইনে
জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে বাংলাদেশ
থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতাল এবং
ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ যৌথভাবে
আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া ফেডারেশন কর্তৃক গৃহীত বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে
অনলাইনে ‘বাংলাদেশের থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার
আয়োজন করেছে।
‘অনাগত সন্তানকে দিতে থ্যালাসেমিয়া থেকে
সুরক্ষা, বিয়ের আগে করুন রক্তের
ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষা।’
এ
উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী
দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া
রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই।
বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক
নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা
করে রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। ব্যাপক
জনসচেতনতা ও তরুণ প্রজন্মের
অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন
তিনি। এ দিকে বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের
মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩ থেকে ৪
শতাংশ থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছে। এদের
মধ্যে যারা বিটা থ্যালাসেমিয়া
মেজর তাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে প্রতি মাসে নিয়মিত রক্ত
নিতে হয়। কিন্তু করোনাকালীন
সময়ে রক্ত সংগ্রহ কমে
গেছে আশঙ্কাজনক হারে।
তরিকুল/সবুজ/এম. জামান