• ঢাকা শুক্রবার
    ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানবাধিকারের কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না : ফখরুল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২, ১০:১৪ পিএম

মানবাধিকারের কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘গণতন্ত্র হরণকারীরা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, তখন লজ্জা ধিক্কার ছাড়া কিছুই আশা করা যায় না। তিনি (শেখ হাসিনা) আজ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বড় বড় কথা বলছেন যে, যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। কেউ চায় না যুদ্ধ, কেউ চায় না নিষেধাজ্ঞা। প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানবাধিকারের কথা মানায় না।’

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের শতকরা ৪২ জন মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। আর তারা (আওয়ামী লীগ) কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। তরুণদের এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। তরুণদের জেগে উঠতে হবে, বাংলাদেশের মানুষদের জেগে উঠতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শাওন, আব্দুর রহিম, নূরে আলমের রক্তকে বৃথা যেতে দেয়া যাবে না। তাদের রক্তের প্রতি সত্যিকার অর্থে যদি শ্রদ্ধা জানাতে চাই, ভালোবাসা জানাতে চাই; তাহলে এ ভয়াবহ দানব সরকারকে প্রতিহত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ছয় শতাধিক মানুষ গুম হয়ে গেছে। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম থেকে শুরু করে আমাদের ছাত্রদলের অসংখ্য ছেলে। এই সমস্ত ছেলেগুলো মায়ের কুল খালি করে চলে গেছে। মা জানে না, বাবা জানে না, কোথায় তারা। তারা আজ শত শত মানুষকে থানায় নিয়ে গিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে। সহস্রাধিক মানুষকে তারা হত্যা করেছে। এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করেছে। এ কারণে আজ এলিট ফোর্স র‌্যাব যারা দেশের সুনাম কুড়িয়েছিল অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে। এ সরকারের অন্যায় আদেশ মানতে গিয়ে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে। সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে এটা নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। তারাই নির্দেশ দাতা, তাদের সবার আগে নিষেধাজ্ঞা আসা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জনগণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দিয়েছে। মানুষ বলে দিয়েছে তোমাদের আর দরকার নেই।‘

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগে উন্নয়নের কথা খুব বেশি বলতো এখন একটু কম বলে। উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না যদি সেখানে গণতন্ত্র না থাকে। আর গণতন্ত্র কখনোই ফলপ্রসূ হবে না যদি সেখানে বিরোধী দল না থাকে।’

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একজন ব্যক্তি ছাড়া বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তি নেই। এক ব্যক্তির শাসন, এক ব্যক্তির মতবাদ, এক ব্যক্তির সব। কিন্তু এগুলো টিকে না। এ ধরনের কর্তৃত্ববাদ, এ ধরনের ফ্যাসিবাদ কখনোই টিকে না। অন্যায় করে, নির্যাতন করে; ভালোবাসা না থাকলে প্রেম না থাকলে কখনও কি কাউকে চিরস্থায়ী করা যায়?’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ বিনির্মাণে, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে, উল্লেখযোগ্য যে ভূমিকা রয়েছে তার ইতিহাস তুলে ধরা। বিশেষ করে, গত ১৪ বছরে যারা সরকারে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে। বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসকে বিকৃত করে শুধু তাদের স্বার্থে নতুন করে ইতিহাস রচনা করার অপচেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি ঐতিহাসিক এবং ইতিহাসবিদরা ইতিহাস রচনা করে। এ ছাড়া কেউ ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারে না। তারা হয়তো সাময়িক রচনা লিখতে পারেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ৫০ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাস আমরা প্রত্যেকের হাতে তুলে দেব।’

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডক্টর এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

জেইউ

আর্কাইভ