• ঢাকা শুক্রবার
    ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা নেই, ১১ দিন ধরে কারাগারে অটোরিকশা চালক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২, ০৯:৩৫ পিএম

মামলা নেই, ১১ দিন ধরে কারাগারে অটোরিকশা চালক

ময়মনসিংহ ব্যুরো

মামলার কোনো অস্তিত্বই নেই। অথচ ১১ দিন ধরে কারাভোগ করছেন বুলবুল ইসলাম বুলু (৪০) নামের এক অটোরিকশা চালক। বরগুনা জেলার একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে ময়মনসিংহ কারাগারে নেয়া হয়েছে।

স্বজনরা বলছেন, বরগুনা আদালত থেকে মামলা নেই মর্মে জানানো হলেও, মুক্তি মিলছে না বুলবুলের। ফলে বিনাদোষে এখনও কারাগারে আটকে আছেন তিনি।

জানা গেছে, পেশায় অটোরিকশার চালক বুলবুলের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের জামতলী গ্রামে। পরিবারে পাঁচ ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। অটোরিকশা চালিয়ে সারাদিন যা রোজগার করেন তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার।

গত ২০ জানুয়ারি বাড়ির সামনে থেকে বুলবুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ত্রিশাল থানা পুলিশ। অভিযোগ ছিল, বরগুনা জেলার সদর থানার ২০১৮ সালের একটি অস্ত্র মামলার আসামি বুলবুল। অথচ স্বজনদের দাবি, ময়মনসিংহ জেলার বাইরে কখনও কোথাও যায়নি বুলবুল। তবে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি বিনাদোষে ১১ দিন ধরে কারাগারে থাকায় দিশেহারা ভুক্তভোগী পরিবার।

স্বজনরা বুলবুলকে ছাড়াতে ময়মনসিংহ ও বরগুনা আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও খুঁজে পাচ্ছেন না কোনো কূল-কিনারা।

বুলবুলের মেজো ভাই সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের জানামতে- এমন কোনো শত্রু নেই যে তারা এত বড় একটা মামলা দেবে। এ নিয়ে বরগুনা আদালতে আমরা যোগাযোগ করেছি কিন্তু মামলার কোনো নথি পাইনি। এ ব্যাপারে সেখান থেকে যে কাগজ দিয়েছে এটি যে কাকে দেখালে কাজ হবে এটাও বুঝতে পারছি না।

এদিকে বরগুনা জেলার যে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, সেই মামলার কোনো অস্তিত্ব নেই বলে স্বীকার করেছে থানা পুলিশ। এমনকি মামলার কোনো তথ্য নেই আদালতেও।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের রেজিস্টারপত্র পর্যালোচনা করেছি। তাতে দেখা গেছে- ২০১৮ সালের ১৭ নম্বর মামলাটি কোনো অস্ত্র আইনে করা নেই। ওই ব্যক্তির নামে যেহেতু অস্ত্র আইনে কোনো মামলাই হয়নি সুতরাং এখানে তদন্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।’

ত্রিশাল থানা পুলিশের দাবি, ওয়ারেন্ট থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে আসামিকে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, ‘বাইরের জেলা থেকে যে সমস্ত ওয়ারেন্ট আসে সেগুলো সাধারণত প্রথমে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যায়। সেখান থেকে তা কোর্ট ইন্সপেক্টরের কাছে পাঠানো হয়, তারপর প্রক্রিয়া মোতাবেক আমাদের কাছে আসে। পরে আমরা ওই আসামিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করি।’

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের চাওয়া- ভুয়া এ ওয়ারেন্ট থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ায় যে বা যারা জড়িত তাদের যেন খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হয়।

জেডআই/ডা

আর্কাইভ