• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

জীবননগরে পানি শোধনাগার চালু না হওয়ায় কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্টের আশঙ্কা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৩, ০৪:০২ এএম

জীবননগরে পানি শোধনাগার চালু না হওয়ায় কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্টের আশঙ্কা

ছবি: সিটি নিউজ ঢাকা

মিঠুন মাহমুদ, চুয়াডাঙ্গা

জীবননগর পৌরসভায় পানি শোধনাগার হস্তান্তর হলেও চালু না হওয়ায় ৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি শোধানাগার ও পাম্প হাউজগুলো শেওলা, আগাছা, ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। হস্তান্তরের পর চালু না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা। শোধনাগার ও পাম্প হাউজ চালানোর জন্য প্রয়োজনী লোকবল সংকট, সংযোগ লাইন সম্প্রসারণ না হওয়া ও অর্থের ব্যবস্থা না থাকায় বন্ধ রয়েছে পানি শোধানাগারটি। যার ফলে জীবননগর পৌর এলাকার সাধারন মানুষ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত আর্সেনিক ও আয়রনযুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পৌরসভা থানা গ্রোথ সেন্টার প্রকল্পের আওতায় জীবননগর পৌর সভায় পানি শোধনাগার ও পাম্প হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ফেব্রয়ারী মাসে। ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পানি শোধানাগার ও পাম্প হাউজ এবং ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জীবননগর পৌর সভায় ৩০০ পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করা হয়। 

No description available.

পৌরসভা থানা গ্রোথ সেন্টারে রয়েছে তিনটি পাম্প হাউজ ও একটি শোধানাগার। একটি পাম্প হাউজ ও মূল পানি শোধনাগার রয়েছে জীবননগর পৌরসভার অভ্যন্তরে। এছাড়াও নারায়নপুর সরকারপাড়া ও জীবননগর হাইস্কুলপাড়ায় রয়েছে দুটি পাম্প হাউজ। পাম্প হাউজগুলো থেকে পানি শোধনাগারে আসার পর ফিল্টার ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সরবরাহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। সরাসরি পাম্পগুলো থেকে জরুরি মুহুর্তে পানি সরবরাহ করারও ব্যবস্থা রয়েছে।

জীবননগর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের মনির ট্রেডার্স নামের এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে এ কাজটি পায়। পরে জীবননগরের সাইফুল ইসলাম টগর নামের এক ঠিকাদার কাজটি শেষ করে। এ প্রকল্পের আওতায় জীবননগর পৌর সভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩০০ বাড়িতে পানি সরবরাহের জন্য পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দেওয়া হয়। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ২০০ লাইন সংযোগ দেয়। এটা কয়েক মাস চালু করে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দায়সারা কাজ করে হস্তান্তর করেছে। 

এটা পৌরবাসীর কোন কাজেই আসছে না। পৌরবাসিন্দা সালাউদ্দিন কবির বলেন, সরকার একটা উদ্যোগ নিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে জীবননগর পৌরসভায় যে পানি শোধনাগার স্থাপন করলো তার কোন সুফল পৌরবাসী পাচ্ছে না। দিনে দিনে যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট যাচ্ছে। দ্রুত এর ব্যবস্থা না নিলে যন্ত্রপাতি ও পাইপ লাইনগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

জীবননগর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল কাশেম বলেন, সরকার জীবননগর পৌরবাসীর নিরাপদ পানির জন্য পৌর চত্বরে থানা গ্রোথ সেন্টারটি অনেক টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছে। কিন্তু এর কোন সুফল পৌরবাসী পাচ্ছে না। একদিনও চালু করা হয়নি। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, এখনও পর্যন্ত কোন ফল পায়নি। 

No description available.

চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শেখ ফরিদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, জীবননগর পৌর সভায় নিরাপদ পানির জন্য পানি শোধনাগার স্থাপন করা হয়েছে অনেক আগে। কেন চালু করা হয়নি এটা আমি জানি না। তবে সমস্যা থাকলে চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং এ বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। আশা করি খুব দ্রুত এর একটা সমাধান হবে। 

জীবননগর পৌরসভার মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভায় পানি শোধানাগার স্থাপন করা হলেও তারা চালু না করে হস্তান্তর করে চলে গেছে। এটা চালু করার জন্য আমরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বলেছি। এটা যদি চালু রাখার ব্যবস্থা না করা হয় তা হলে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও পাইপ নষ্ট হবে। আর এটা চালু হলে পৌরবাসী নিরাপদ পানি পান করতে পারবে।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

এমএম/

আর্কাইভ