• ঢাকা সোমবার
    ১৩ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১

৮০ প্রাসাদের মডেল বানিয়েছেন তিনি

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২১, ০৫:৩৪ পিএম

৮০ প্রাসাদের মডেল বানিয়েছেন তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জার্মান নাগরিক গ্যুন্টার বাইনার্ট পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তার বয়স এখন ৮৭ বছর। শখ সিমেন্ট আর ইটের খোয়া দিয়ে বড় বড় দুর্গ প্রাসাদের মডেল বানানো। এখন পর্যন্ত ৮০টির বেশি প্রাসাদের মডেল বানিয়েছেন তিনি।

গ্যুন্টার বাইনার্টের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে জার্মানির সাক্সোনি-আনহাল্ট রাজ্যের মানসফেল্ড কাসেল। জার্মানির দক্ষিণের হার্তস অঞ্চলে অবস্থিত আসল মানসফেল্ড কাসেল একাদশ শতকে নির্মিত হয়েছে। একসময় এটি সেন্ট্রাল জার্মানির সবচেয়ে বড় দুর্গ ছিল। ওই কাসেলকেই :২৫ স্কেলে তৈরি করেছেন বাইনার্ট। সময় লেগেছে প্রায় দেড় বছর। ১২০ বর্গমিটার জায়গার ওপর এটি বানানো মডেল মানসফেল্ড কাসেলের পরিধি ৩৮ মিটার। এর মধ্যে হাঁটাও যায়।

বাইনার্টের আরেক কাজ ভেটিন কাসেল। সিমেন্ট আর ইটের খোয়া দিয়ে এটি বানিয়েছেন তিনি। বাইনার্ট বলেন, ‘ছাদের পুরনো টাইলস ভেঙে আবার জোড়া লাগিয়েছি আমি। প্লাস দিয়ে প্রতিটার ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে। সবকিছুই হাতে তৈরি।

গ্যুন্টার বাইনার্ট রাজমিস্ত্রি ছিলেন। গত শতকের ৩০-৪০ দশকের দিকে সিগারেটের প্যাকেটে থাকা কাসেলের ছবি দেখে তিনি এসব নির্মাণ করেছেন। তিনি জানান, ‘আমি প্রথম মা-বাবার বাড়িতে একটি ফ্যান্টাসি কাসেল বানিয়েছিলাম। আনন্দের জন্যই করেছিলাম। জানিনা কীভাবে আমার মধ্যে সেই ধারণা এসেছিল।

গ্যুন্টার বাইনার্ট ১৯৪৯ সালে কাসেল বানানো শুরু করেন। একসময় কাসেলের সংখ্যা এত বেশি হয়ে গিয়েছিল যে, তার বাগানে আর জায়গা হচ্ছিল না। তখন শহর কর্তৃপক্ষ তাকে জায়গা দিয়ে সহায়তা করে। তবে কাসেল বানানোর জন্য তাকে কোনো অর্থ দেয়া হয়নি। বাইনার্ট বলেন, ‘মানুষের জন্য আমি এসব করি, বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য। তাদের আমি খুশি দেখতে চাই। তারা আনন্দ পেলে সেটাই আমার সম্মানি। এর বেশি কিছু আমি চাই না।

হোয়েনসলার্ন বংশের শাসকরা জার্মানি শাসন করেছেন ১৮৭১ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত। তাদেরই একজন ১৮৫০ সালে পিতৃপুরুষের ভিটায় এই দুর্গ নির্মাণ করেন। বাডেন ভুর্টেমব্যার্গে পাহাড়ের ৮৫৫ ফুট ওপরে হোয়েনসলার্ন দুর্গের অবস্থান।

শুধু কাসেল নয়, কয়েকটি লোকোমোটিভও বানিয়েছেন বাইনার্ট। প্রতিটির ক্ষেত্রে ছোট ছোট বিষয়ও খেয়াল রেখেছেন।

গ্যার্বস্টেটের পুরনো রেলস্টেশনে রাখা মডেলগুলোর মধ্যে আছে বিশ্বের অন্যতম বড় লোকোমোটিভ, নামবিগ বয় আরও আছে জার্মানির প্রথম স্টিম লোকোমোটিভদ্য আডলার' বাইনার্ট বলেন, ‘অবাক করা বিষয় হচ্ছে, আমি জীবনে কখনো রেলওয়েতে কাজ করিনি। ফলে লোকোমোটিভ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। তবে সাঙ্গারহাউজেনের আমার এক সহকর্মী আমাকে ছবি দিয়ে সাহায্য করেছে। আমার কাছে একটা লোকোমোটিভ আগেরটার চেয়ে ভালো লেগেছে। এভাবে ৪০-৪২টি লোকোমোটিভ তৈরি হয়ে গেছে।

বাইনার্টের তৈরি মডেলগুলো এখন গ্যার্বস্টেটের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। হেঁটে সব কাসেল দেখার জন্য পথের নকশাও তৈরি করা হয়েছে। বাইনার্ট তার কাজ নিয়ে গর্বিত। তিনি বলেন, ‘আমি এখন এগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করি, তুমি কীভাবে এসব করলে, কীভাবে পারলে?’

সিমেন্ট আর ইটের খোয়া দিয়ে তৈরি দুর্গ, প্রাসাদ আর লোকোমোটিভএমন উন্মুক্ত জাদুঘর সম্ভবত পৃথিবীতে আর নেই।

সবুজ/এএমকে

আর্কাইভ