• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিবচরে বেড়েছে নদী ভাঙন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ০৮:২০ পিএম

শিবচরে বেড়েছে নদী ভাঙন

মাদারীপুর প্রতিনিধি

টানা কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে শিবচর উপজেলার শিরুয়াইলবহেরাতলা দক্ষিণ, নিলখী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, গাছের বাগান, বসতবাড়ি আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে এলাকার কমপক্ষে ১০০ বিঘা ফসলি জমি নদের ভাঙনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়াও নিলখী ইউনিয়নের একটি মাদরাসাও নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের পশ্চিম কাকৈর গ্রামে গত সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে হারিয়ে গেছে ফসলি জমি, ৫০টি বসতবাড়ি, মসজিদ, মাদরাসা। ভাঙনের হুমকিতে থাকা পরিবারগুলো নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে এসব এলাকার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়িতে পানি উঠে গেছে।

এ দিকে উপজেলার বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাতলা এলাকাতেও ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০ বিঘা ফসলি জমি, অর্ধশত বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীর পাড় থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অন্যান্য পরিবার। এই এলাকাতেও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করলেও ভাঙন কমছে না বলে জানা গেছে।

নদী ভাঙনের শিকার দাদন সিপাই জানান,‘পানি বাড়ায় নদী ভাঙন বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে ৫০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত আমাদের এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা না হলে আমাদের গ্রামটি কিছু দিনের মধ্য আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

মো. বজলুর রহমান বলেন,‘গত তিন দিনের ভাঙনে আমার ১০ কাঠা জমির লাগানো গাছ বিলীন হয়ে গেছে। গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। প্রতিদিনই নদীতে ভাঙছে। এতে আমি প্রায় ৩০ লাখ টাকার লোকসানে পড়ব।’

চরকামারকান্দি জামিয়া ইসলামিয়া আশ্রাফুল উলুম মাদরাসার শিক্ষক মো.আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মাদরাসাটি এখন নদীর পাড়ে। গত দুই দিনে মাদরাসার ছাত্র হোস্টেল ও কয়েকটি কক্ষ ভাঙনের শিকার হয়েছে। পুরো মাদরাসাটি ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।’

শিরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সুরাব উদ্দিন মাতুব্বর বলেন,‘গত এক সপ্তাহে অর্ধশত বসতবাড়ি, পাকা মসজিদসহ অসংখ্য ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে নদী ভাঙন বেড়েছে। এখানে জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে স্থায়ী বাঁধ দেয়া হবে এই এলাকায়।’

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনের অংশে ইতোমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখানে স্থায়ী বাঁধ দেয়া হবে। শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু হবে। শিবচরের সন্ন্যাসীর চর, বহেরাতলা দক্ষিণ, বন্দরখোলা ও শিরুয়াইল ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প চলমান রয়েছে।

সবুজ/এম. জামান

আর্কাইভ