• ঢাকা শুক্রবার
    ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রাডার অচল থাকার পরও যেভাবে পূর্বাভাস বার্তা দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর

প্রকাশিত: মে ২, ২০২৪, ০৮:৩১ পিএম

রাডার অচল থাকার পরও যেভাবে পূর্বাভাস বার্তা দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আবহাওয়া অধিদফতরের অধিকাংশ রাডার অচল থাকার পরও প্রতিষ্ঠানটি কী করে পূর্বাভাসের বার্তা দিচ্ছে?  পূর্বাভাসের জন্য বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের ৫টি রাডার থাকলেও যার ৪টিই নষ্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এ অবস্থায় সঠিক তথ্য পাওয়ার কথা না। 

এ প্রসঙ্গে প্রধান আবহাওয়াবিদ ড. শামীম হাসান ভুইয়া অবশ্য বলেন, ‘আবহাওয়া বার্তার জন্য জাপানি স্যাটেলাইট, কোরিয়ান এবং চায়না স্যাটেলাইট ব্যবহার করি আমরা। আর এয়ার ফোর্সের রাডারের সাহায্যে আবহাওয়া বার্তার কাজগুলো চালানো হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, রেডিও ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং বা রাডারের কাজ দূরের কোনো বস্তুর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা। রাডার এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে চলমান বা স্থির বস্তুর অবস্থান, দূরত্ব, উচ্চতা এবং দিক নির্ণয় করা হয়। এই যন্ত্রকে ব্যবহার করে রাতেও দূরের বস্তুকে দেখতে পাওয়া সম্ভব। আকাশ বা সমুদ্র পথে চলাচল ছাড়াও আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস দিতে  পারে রাডার।

বর্তমানে তাপপ্রবাহে পুড়েছ দেশ। এ অবস্থায় সবার সজাগ দৃষ্টি  আবহাওয়া অধিদফতরের দিকে। কবে বৃষ্টি হবে কিংবা   আবহাওয়া অফিস আর কী পূর্বাভাস ও সম্ভাবনার কথা বলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, অধিকাংশ রাডার অচল থাকায়  কী করে বার্তা দিচ্ছে দফতরটি?

আবহাওয়া অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, দেশে প্রথম রাডার স্থাপন করা হয় ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর। জাইকার অর্থায়নে দুটি রাডার পটুয়াখালীর  ও কক্সবাজারে বসানো হয় । তারপর বসানো হয় ঢাকা, রংপুর ও মৌলভীবাজারে।জাপানের অর্থায়নে সম্প্রতি জয়দেবপুরে একটি রাডার বাসানো হয়,  রংপুরেরটি প্রক্রিয়াধীন। আর তিনটির অর্থায়নে জাপান সরকার অস্বীকৃতি জানালে সরকারি অর্থায়নে বসানোর প্রক্রিয়া চলছে।

যা জানা যাচ্ছে, আগের স্থাপিত রাডারগুলো সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কাজে লাগানোর  কথা থাকলেও প্রতিটি রাডার ব্যবহার করা হয় অতিরিক্ত আরও অনেক বছর।

অধিদফতর জানায়, নষ্ট হওয়া রাডারগুলো প্রতিস্থাপনে জাইকা অনুদান দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নিজেদের অর্থায়নেই রাডার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে চলছে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম নিজেদের সামর্থ্য বাড়ানোর পরামর্শ দেন।স্যাটেলাইট ও রাডার একে অন্যের পরিপূরক হলেও বিকল্প নয় জানিয়ে তিনি বলেন,  বঙ্গোপসাগরের অনেক দূরে সাইক্লোন সৃষ্টি হয়েছে, সেটা স্যাটেলাইট ট্রেস করে দেবে, রাডার না। আর যখন সেটি কাছে আসবে তখন রাডার ট্রেস করবে, স্যাটেলাইট না। অর্থাৎ, স্যাটেলাইট প্রাথমিক তথ্য দেবে, আর রাডার সেটার বিস্তারিত তথ্য দেবে। এ দুটি একটি অন্যটির হাত ধরে চলবে। এখানে একজন অন্যজনের পরিপূরক হলেও বিকল্প নয়। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির ওপর নির্ভর করে ভালো তথ্য পাওয়া যাবে না।

বিশেষজ্ঞ প্রত্যাশা করছেন যে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ হলে  আবহাওয়া অধিদফতরের সক্ষমতা বাড়বে আগের চেয়ে অনেক বেশি। 

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ