• ঢাকা বুধবার
    ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিল ঘোষণার পরই প্রচারণায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা, মাঠে নেই বিএনপি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩, ০৪:৩৩ পিএম

তফসিল ঘোষণার পরই প্রচারণায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা, মাঠে নেই বিএনপি

গাজীপুর প্রতিনিধি

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ইতোমধ্যে গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গাজীপুর সিটির তফসিল ঘোষণা করা হয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছে। ব্যানার, ফ্যাস্টুন, রঙিন পোস্টার শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট, অলিগলি ও বাড়ির দেয়াল ছেয়ে যাচ্ছে। দিন দিন প্রার্থীদের প্রচারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শুক্রবার রমজানুল মোবারকের ১৫তম দিনে পবিত্র জুমার নামাজ সামনে রেখে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা নগরের বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করে মুসল্লিগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। অনেকে ইমাম বয়ান ও খুদবা পাঠে আগে মুসল্লিগণের নিকট দোয়া চেয়েছেন।

জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন গাজীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। এ সময় তিনি উপস্থিত মুসল্লিগণের কাছে একজন মেয়র প্রার্থী হিসেবে দোয়া প্রার্থনা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন। পরে তিনি নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জয়দেবপুর বাজার ও আশপাশের এলাকায় লিফলেট বিতরণ এবং গণসংযোগ করেছেন। এর আগে তিনি অধুনালপ্ত পূবাইল ইউনিয়ন এলাকার বর্তমান মহানগরের ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মিসভা করেছেন।

মহানগর জাতীয় পার্টির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সালাম মোল্লা জানান, বিকালে তিনি আসরের নামাজ আদায় করেছেন মহানগরের বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এবং ৩৬নং ওয়ার্ডের কামারজুরিতে তিনি একটি ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মো. জাকির হোসেন, হারুন অর-রশিদ, গাজীপুর মেট্রো সদর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম সরকার, সাধারণ সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, জাতীয় পার্টি নেতা আশরাফুল ইসলাম আলম, মো. রমজান আলী, হাসন সারোয়ার সুজন, সালামত হোসেন, আব্দুস সালাম মোল্লা প্রমুখ।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম সকালে তার নিজ বাসায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দুপুরে তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন মহানগরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড বড়বাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে খুদবা পাঠের আগে হুজরায় দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত মুসল্লিগণের নিকট দোয়া প্রার্থনা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন। নামাজ শেষে তিনি নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডের মোগড়খাল এলাকায় একটি মাদ্রাসায় দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। পরে তিনি শহরের ২৬নং ওয়ার্ডে গাজীপুর মেট্রো সদর ইমাম সমিতির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হান্নু, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মজিবুর রহমান, ২৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. খায়রুল ইসলাম, ২৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রশিদ খান শিপু, গাজীপুর বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।

আসরে তিনি যান ২৮নং ওয়ার্ডের লাগালিয়া এলাকায় একটি ইফতার ও দোয়া মাহফিলে এবং সন্ধ্যায় তিনি ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোয়েব আল আসাদ মনিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে ইফতার গ্রহণ করেন।

এ ছাড়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক মো. কামরুল আহসান সরকার রাসেল সকালে তার নিজ বাসায় উপস্থিত নেকাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিনি অধুনালপ্ত কাশিমপুর ইউনিয়ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। তিনি জুমার নামাজ আদায় করেন ওই এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের সারদাগঞ্জ মাদ্রাসা মসজিদে। নামাজ শেষে তিনি ২নং ওয়ার্ডের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন। পরে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সদ্যপ্রয়াত ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবুল কালামের সদ্যপ্রয়াত বাবার কবর জিয়ারত করেন। তিনি ১নং ওয়ার্ড প্রবাল হাউজিং এলাকাবাসীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তির প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, মহানগর আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণসহ অর্ধডজন নেতা। তারাও বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

অন্যদিকে পিছিয়ে নেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তারাও গত ১৮ মার্চ মহানগরের সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে ওই সংগঠনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) তাদের দলীয় মেয়রপ্রার্থী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের নাম ঘোষণা করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নগরের দেয়ালে দেয়ালে রঙিন পোস্টার সাঁটিয়েছেন টঙ্গীর বিখ্যাত সরকার পরিবারের সন্তান সরকার শাহনূর ইসলাম রনি। তিনি নূরুল ইসলাম সরকারের ছেলে ও বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসন উদ্দিন সরকারের ভাতিজা।

তবে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই গাজীপুর সিটির প্রথম নির্বাচনে এক লাখ ছয় হাজার ৫৭৭ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত দল বিএনপির কোনো প্রার্থী মাঠে না থাকায় ভোটারের মনে উত্তাপ দেখা যাচ্ছে না। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবেন না।

 

 

বিএস/

আর্কাইভ