• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ, নিহত বেড়ে ৩১

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২, ০৬:২৩ এএম

ইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ, নিহত বেড়ে ৩১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

হিজাব না পরায় পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনির মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইরান। হিজাব বিরোধী এই সহিংস বিক্ষোভ চলছে ৬ দিন ধরে। শুরুর দিকে এই বিক্ষোভ ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কুর্দিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বিক্ষোভ দমনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীও।

বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। নরওয়ে ভিত্তিক এক এনজিও এই তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোঘাদ্দাম এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হচ্ছে এবং চলমান বিক্ষোভে গত ছয়দিনে ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১ জন। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে গণগ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে আইএইচআর।

তিনি বলেন, ‘ইরানের জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা আদায়ে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু ইরান সরকার বুলেট দিয়ে তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করছে।’

বিক্ষোভ দমাতে দেশটির কর্তৃপক্ষ সামাজিম যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ-ইন্সটাগ্রাম সেবাও বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া ইরানজুড়ে উল্লেখযোগ্য ইন্টারনেট পরিষেবাও বিপর্যয় ঘটেছে। দেশটির লাখ লাখ মানুষ এখন অফলাইনে।

আইএইচআর নিশ্চিত করেছে, ইরানের ৩০টির বেশি শহরে এবং অন্য নগর কেন্দ্রেও বিক্ষোভ চলছে। দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী গণহারে বিক্ষোভকারীদের এবং সিভিল সোসাইটির অ্যাক্টিভিস্টদের গ্রেফতার করছে।

এর আগে মাথায় হিজাব না থাকায় গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা (মর‌্যালিটি) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণী। গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

তারপর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার মৃত্যু হয় মাশার।

ইরানের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী পড়াশোনা সূত্রে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে থাকতেন মাশা, গত সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে তেহরান এসেছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কুর্দিস্তানে। পরে দ্রুততার সঙ্গে অন্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে সেই বিক্ষোভ।

ইরানে জনপরিসরে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দাবিধি রয়েছে। এই বিধিগুলো কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারক করে দেশটির মর‌্যালিটি পুলিশ।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের অন্তত ৫০টি শহরে বিক্ষোভ চলছে। এর আগে ২০১৯ সালে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল ইরানে। রয়টার্সের তথ্যমতে তারপর এত বড় বিক্ষোভ দেশটিতে আর হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আর হয়নি দেশটিতে।

এআরআই/জেইউ

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ