• ঢাকা শুক্রবার
    ১০ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিল উত্থাপন

আইএমইডি থেকে বেরিয়ে পৃথক কর্তৃপক্ষ হচ্ছে সিপিটিইউ

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৩, ০১:৪৮ এএম

আইএমইডি থেকে বেরিয়ে পৃথক কর্তৃপক্ষ হচ্ছে সিপিটিইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, ক্রয় প্রক্রিয়া সহজ ও টেকসই এবং ক্রয় কাজে অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন একটি অথরিটি (কর্তৃপক্ষ) গঠন করা হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বিলটি পাস হলে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অধীন থেকে বেরিয়ে যাবে।

বুধবার (৫ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এ বিলটি উত্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিলের উপর আপত্তি জানান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. ফখরুল ইমাম। তার আপত্তি কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলটি উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইনগুলোর প্রতিপালন নিয়ন্ত্রণ, পরিবীক্ষণ, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানের জন্য ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ)’ গঠিত হবে। বিপিপিএ’র ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, যার চেয়ারম্যান হবেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ কর্তৃপক্ষের ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-এর সচিব। সরকার নিয়োগকৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এই কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

বিলের ৯ ধারায় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলীতে বলা হয়েছে, এই কর্তৃপক্ষ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও আইনি কাঠামো প্রণয়ন; বিপিপিএ’র পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক নীতি প্রণয়ন; বিপিপিএ’র উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন; বিপিপিএ’র সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০০৮ এর প্রয়োজনীয় সংশোধন আনাসহ সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।

বিলের ১৫ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে সরকারি কেনাকাটার তথ্য, দলিল ও নথিপত্র তলবের ক্ষমতা থাকবে বিপিপিএর। কেনাকাটার ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনগুলো সঠিকভাবে মানা হয়েছে কি-না, তা নিশ্চিত করতে সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ ও নথিপত্র পর্যালোচনা করতে পারবে। সরকারি কেনাকাটায় কোনো আইন ও নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে তা সংশোধন করে কোনো ক্রয়কারীকে ক্রয় প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন বা সংশোধন করার পরামর্শ ও সুপারিশ বা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে পারবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ২০০২ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি’র অধীনে একটি ইউনিট হিসেবে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) গঠন করা হয়। সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে সিপিটিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু সরকারের উন্নয়ন বাজেটের পরিমাণ প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে অনুযায়ী সরকারি ক্রয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ক্রয়ের এ বর্ধিত কলেবরের আইনি ও কারিগরি তত্ত্বাবধানের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো সিপিটিইউতে নেই। তাই আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াজনিত বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ জন্য বিলটি আনা হয়েছে।

 

বিএস/
 

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ