প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম
বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেছেন।
বেলা ১১টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যোগদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া একজন প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদী রাজনীতিতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেধাভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও অগ্রচিন্তার মানুষদের নিয়ে আগামী ভবিষ্যতের রাজনীতি বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের ৩১ দফার মূল বক্তব্যও তাই। রাষ্ট্রকাঠামোর প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য আমাদের প্রয়োজন অনেক মেধাবী নেতৃত্বের, যারা জাতীয় অর্থনীতি ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের স্বপ্নের-প্রত্যাশার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারবো।।
বিএনপিতে যোগদান প্রসঙ্গে রেজা কিবরিয়া বলেন, বিএনপিতে যোগদান দিয়ে খুবই গর্বিত। এই দলটার ইতিহাস হচ্ছে গণতন্ত্রের ইতিহাস। দুই দুইবার তারা ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে। একবার শেখ মুজিব গণতন্ত্র ধ্বংস করার পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তা রক্ষা করলেন। আরেকবার জেনারেল এরশাদের কাছ থেকে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। একটা দল দুইবার বহুতান্ত্রিক গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে, আমি ইতিহাসে এ রকম উদাহরণ আর কোনো দেশে দেখি না। এসব কারণে আমি বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার আদর্শ। উনার সাহস ও সততা নিয়ে এত বছর পরও গ্রামের লোক তাকে নিয়ে কথা বলেন, এ রকম লোক বাংলাদেশে আর জন্মায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সাহায্য করবো নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য।
এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে দলে স্বাগত জানান এবং বলেন, আজকে দেশের একজন অত্যন্ত বিশিষ্ট সন্তান, যিনি নিজের যোগ্যতা বলে আইএমএফের অত্যন্ত উচ্চপদে কাজ করেছেন এবং পরবর্তীকালে তিনি দেশে এসে ২০১৮ সালে গণফোরাম থেকে আমাদের যুক্তফ্রন্টের মনোনয়ন নিয়ে ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত ড. রেজা কিবরিয়া আজকে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, অনেক আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি নতুনভাবে বাংলাদেশকে নির্মাণ করার। দেশে এখন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. ইউনূস ইতোমধ্যেই ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে দেশের মানুষ এই সুযোগটি গ্রহণ করে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন এবং তারা একটা সংসদ গঠন করবেন। এর মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন। আমরা আশাবাদী ড. রেজা কিবরিয়ার এই যোগদান আমাদের এই কর্মকাণ্ডকে আরও শক্তিশালী করবে।
রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য ২২৭ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেখানে হবিগঞ্জ-১ আসনটি ফাঁকা রেখেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া বিএনপির জোটসঙ্গী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে একই আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকেই নির্বাচন করেছিলেন।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে রেজা কিবরিয়া গণফোরামে যোগদান করে পরে দলটির সাধারণ সম্পাদক হন। পরে তাকে কেন্দ্র করে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এরপর তিনি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ গঠন করেন। সেখানে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সেখানে তাকে কেন্দ্র করে দলটিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়। পরে বিভক্ত দল আমজনতার দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রেজা কিবরিয়া।