প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১, ১১:৪২ এএম
ক্রিকেট হোক, বা ফুটবল,
কিংবা টেনিস। ২০২১ সালটা তরুণ
খেলোয়াড়দের কাছে এখনও পর্যন্ত
সোনার সময়। তিনটি খেলার
ক্ষেত্রেই ‘টিন এজার’-রা নিজেদের মঞ্চে
আলো জ্বেলেছেন। অভিজ্ঞদের পেছনের সারিতে ফেলে কেড়ে নিয়েছেন
যাবতীয় প্রচারের আলো। তরুণদের দাপটকে
কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্ব। ইউএস ওপেনের মহিলাদের
ফাইনালে এরকমই দুজনের মুখোমুখি হওয়া এটিকে আরও
প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৮ বছরের এমা
রাদুকানু এবং ১৯ বছরের
লেইলা ফার্নান্ডেজ সেখানে মুখোমুখি হচ্ছেন।
রাদুকানু
প্রথমে হইচই ফেলেছিলেন এ
বছরের উইম্বলডনে। চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছিলেন তিনি। তখনই তাকে নিয়ে
হইচই হয়েছিল। ইউএস ওপেনে একদম
ফাইনালে উঠে গিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, আমেরিকার লেইলার আগে কোনও গ্র্যান্ড
স্ল্যামে তৃতীয় রাউন্ডের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। ইউএস ওপেনে জীবনের
সেরা ছন্দে রয়েছেন তিনি।
স্পেনের
কার্লোস আলকারাজকে বলা হচ্ছে ভবিষ্যতের
নাদাল। তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে
উঠেছিলেন। চোটের জন্য নাদাল এবার
ইউএস ওপেনে খেলতে পারেননি। কিন্তু সেই অভাব অনেকটা
মিটিয়ে দিয়েছেন আলকারাজ। কোয়ার্টার ফাইনালে যার কাছে হেরেছিলেন,
ফ্রান্সের সেই ফেলিক্স অগার-অ্যালিয়াসিমেও এই মুহূর্তে পেশাদার
সার্কিটে অন্যতম প্রতিভাবান খেলোয়াড়।
আমেরিকার
কোকো গফ প্রতিভাবানদের মধ্যে
আরেকজন। ২০১৯ থেকে পেশাদার
সার্কিটে তিনি খেলছেন। সেবার
উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছিলেন। এবার ফ্রেঞ্চ ওপেনের
কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিলেন। ডাবলসেও দুবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন তিনি।
ফুটবলে
এই মুহূর্তে তরুণ খেলোয়াড় তুলে
আনার ক্ষেত্রে এগিয়ে বার্সেলোনা। সেই ক্লাবের আনসু
ফাতি এবং পেদ্রি এই
মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বার্সেলোনার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমি
থেকে উঠে এসেছেন ফাতি।
আদতে গিনি বিসাউয়ের হলেও
সম্প্রতি স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়েছেন ফাতি। স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ
খেলাও হয়ে গেছে তার।
১৮ বছর বয়সী এই
ফুটবলার প্রশংসা পেয়েছিলেন লিওনেল মেসির। দুজনে একসঙ্গে জুটি বেঁধে গোলও
করেছেন। সম্প্রতি মেসির ১০ নম্বর জার্সিরও
মালিক হয়েছেন ফাতি। পেদ্রিকে তুলনা করা হচ্ছে আন্দ্রে
ইনিয়েস্তার সঙ্গে। বার্সেলোনায় থাকাকালীন ইনিয়েস্তা যেভাবে মাঝমাঠের দখল একাই নিয়ে
নিতেন, সেই ভূমিকাই পালন
করতে দেখা যাচ্ছে পেদ্রিকে।
ক্রমশ বিপক্ষের কাছে ভয়ের কারণ
হয়ে উঠছেন তিনি। স্পেনের জাতীয় দলের হয়েও ১০টি
ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
বার্মিংহ্যাম
সিটি থেকে উঠে আসা
ফুটবলার জুড বেলিংহ্যামকে নিয়েও
চর্চা হচ্ছে। এখন তিনি বরুসিয়া
ডর্টমুন্ডে খেলছেন। ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে ইতোমধ্যেই
নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছেন
তিনি। কোচ গ্যারেথ সাউথগেট
প্রশংসা করেছেন একাধিকবার। ফ্রান্সের এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা আরেক প্রতিভাবান ফুটবলার।
রেনেঁ থেকে তিনি সম্প্রতি
যোগ দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। কিন্তু তরুণ এই ফুটবলারকে
নিতে মুখিয়ে ছিল অনেক ক্লাবই।
ক্রিকেটে
তরুণদের তুলে আনার পেছনে
বরাবরই সামনের সারিতে থেকেছে পাকিস্তান। তরুণতম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিষেকের তালিকায় প্রথম দুই ক্রিকেটারই পাকিস্তানি।
সেই দেশেরই এক তরুণ বোলার
এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চ মাতাচ্ছেন। অনেকেই
তাকে ভবিষ্যতের ওয়াকার ইউনিস বলতে শুরু করেছেন।
তিনি হলেন নাসিম শাহ।
বছর দুয়েক আগে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার
বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল নাসিমের। তখন তার বয়স
ছিল ১৬। সদ্য ১৮
পেরিয়েছেন। অভিজ্ঞও হয়েছেন অনেকটাই। নিয়মিত দেড়শ কিলোমিটার বেগে বল করে
যাওয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি নেই।
দেশের হয়ে ইতোমধ্যেই ৯টি
টেস্ট খেলেছেন নাসিম। নিয়েছেন ২০টি উইকেট। এ
ছাড়া দেশ-বিদেশের টি-টোয়েন্টি লিগে তিনি খুবই
জনপ্রিয়। বলের গতিবেগ লজ্জা
দিতে পারে অনেক অভিজ্ঞ
ক্রিকেটারকেও।
আফগান
ক্রিকেটার ইব্রাহিম জাদরান রয়েছেন এই তালিকায়। আফগানিস্তান
ক্রিকেট দলে বড় শট
মারতে পারা ক্রিকেটারের অভাব
নেই। এখানেই বাকিদের সঙ্গে পার্থক্য ইব্রাহিমের। তিনি বেশ পছন্দ
করেন ধরে খেলতে। মানসিকতা
অসাধারণ এবং ফিল্ডিংয়ের ফাঁক
খুঁজে নিয়ে অনায়াসে শট
খেলতে পারেন। সে কারণেই টেস্ট
দলে তার ওপর ভরসা
করা হয়। আফগানিস্তানের আর
এক ক্রিকেটার নুর মহম্মদের এখনও
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি ঠিকই, তবে
মাত্র ১৪ বছর বয়সে
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের দলে
ঢুকে পড়েছিল সে। অনূর্ধ্ব-১৯
এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে
একটি ম্যাচে চারটি উইকেট নিয়েছিল সে।
খেলা
যা-ই হোক, ২০২১
প্রমাণ করে দিয়েছে আগামী
দিনে চালকের আসনে আসতে চলেছেন
তরুণ খেলোয়াড়রাই।
শামীম/এএমকে