• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘ ১০ মাসেও হয়নি মানি লন্ডারিং মামলা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২২, ০১:০৪ এএম

দীর্ঘ ১০ মাসেও হয়নি মানি লন্ডারিং মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিভিন্ন মাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে প্রতারণার হাট বসিয়েছিল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বাজারে আসলেও নানা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২ ডিসেম্বর নিজের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে আলেশা মার্ট। গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফেরত না দিয়ে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুরুল আলম শিকদার নিজেই তা ভোগ করছেন, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীদের। দীর্ঘ ১০ মাস পার হলেও গ্রাহকদের দেনা পরিশোধ করেনি মঞ্জুরুল আলম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছেন তিনি। কিন্তু এতটা সময় পার হলেও নিরপেক্ষ তদন্ত করে তার কিংবা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে হয়নি কোনো মানি লন্ডারিং মামলা।

প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানায় বিভিন্ন ব্যাংকে আলেশা মার্টের ৫৬টি হিসাব রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আলেশা মার্টের ওই হিসাবগুলোতে গ্রাহকরা প্রায় ২ হাজার ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে আলেশা মার্ট ১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা তুলে নেয়।

এরপর শুরু হয় প্রতারণার উপর প্রতারণা! প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা অর্থ ফেরতের নাম করে নিজেদের লোকদের দিয়ে অর্থ প্রাপ্তির কথা বলে ফেসবুক পোস্ট দেয়া হয়। যেখানে দেখা যায়, একই নাম্বারের টাকা এবং বান্ডিল দেয়া হয়েছে একাধিক জনকে। এ ছাড়া টাকা প্রাপ্তির পোস্ট দেয়া অধিকাংশ আইডিই ফেক বলেও প্রমাণিত হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আলেশা গ্রুপের ১,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। সে প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে সেগুলো কোথায় এবং সে সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা দেয়া হচ্ছে না কেন?

অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকদের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মঞ্জুরুল আলম শিকদার। তবে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা না হওয়াটা তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা নাকি আঁতাত রয়েছে, জন্ম দিয়েছে সেই প্রশ্নের।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায়, তদন্তসংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা আলেশা মার্টের দেনাকে পুঁজি করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এই তালিকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তার নাম এসেছে। রয়েছে একটি বিশেষায়িত সংস্থার পুলিশ সুপার মর্যাদার একজন কর্মকর্তার নামও। 

অন্যদিকে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা না হলেও ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা ও আনন্দের বাজারসহ বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করা হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ১১টি মামলা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের অধিকাংশই জেলে অথবা দেশের বাইরে আছেন। এদিকে দেশে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন আলেশা মার্ট -এর কর্তা ব্যক্তিরা। তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি এবং পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার দাবি গ্রাহকদের।

 

এআরআই/এএল

আর্কাইভ