• ঢাকা শুক্রবার
    ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলেশা মার্টের টাকা প্রদানে প্রতারণার অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৫:৩৩ এএম

আলেশা মার্টের টাকা প্রদানে প্রতারণার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পুরোনো। আলেশা মার্ট নামটার সঙ্গে যেনো প্রতারণা জড়িয়ে আছে- এমনটাই মনে করেন গ্রাহকরা। প্রতিষ্ঠানটির জন্মই হয়েছে প্রতারণা করার জন্য এমন অভিযোগও অহরহ। 

প্রতারণার মাধ্যমেই গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার। আর নিজেদের কষ্টার্জিত সম্বল হারিয়ে পথে পথে ঘুরছেন তার ফাঁদে পা দেয়া গ্রাহকরা। অর্ডারকৃত পণ্য অথবা পাওনা টাকা কোনোটাই না পেয়ে কেউ কেউ করেছেন মামলা, কেউবা অভিযোগ দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে; আবার কেউবা নেমেছেন আন্দোলনে। আবার আত্মাহুতির হুমকিও দিয়েছেন অনেকে। 

এসবের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার আদালত থেকে শিকদারের নামে জারি হয়েছে শতাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা। তবুও নির্বিকার শিকদার, নির্বিকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী। কোনো এক অদৃশ্য কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে না মঞ্জুর আলম শিকদারকে।

এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে প্রতারিত গ্রাহকরা। যার প্রেক্ষিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর লাইভে আসেন মঞ্জুর আলম। গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের জন্য ১৬ অক্টোবর তারিখ ঘোষণা করেন। তবুও আস্থা পাচ্ছিলেন না গ্রাহকরা। কারণ, মঞ্জুর আলম তার আগেও অনেক তারিখ দিয়েছেন কিন্তু সেটার বাস্তবায়ন করেননি।

ফলে মানবেতর জীবনযাপন করা গ্রাহকদের ক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকে। এর মাঝে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের শান্ত করতে ১৫ অক্টোবর পরিশোধযোগ্য পাওনাদারদের একটি তালিকা প্রকাশ করে আলেশা মার্ট। সে তালিকায় মানা হয়নি কোনো সিরিয়াল। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠে- কিছু ভুয়া আইডি আর মঞ্জুর আলমের পরিচিতদের সমন্বয়ে এই তালিকা করা হয়েছে। যেখানে কোনো সাধারণ গ্রাহকরা নেই।

এরপর ১৬ অক্টোবর কিছু লোকজনকে আলেশা মার্ট কর্তৃক টাকা প্রাপ্তির খবর জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতে দেখা যায়। এ নিয়ে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সাধারণ গ্রাহকরা। তারা দাবি করেন, যারা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তারা কেউ আলেশা মার্টের গ্রাহক নন। এমনকি এক পোস্টদাতাকে আলেশা মার্টের কর্মচারি হিসেবেও শনাক্ত করেন সাধারণ গ্রাহকরা।

এর আগেও এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন মঞ্জুর আলম শিকদার। সে সময় একই টাকার বান্ডিল একাধিক জনকে দিয়ে ছবি তুলে বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করান তিনি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হলে তিনি এবার তার প্রতারণার স্ট্র্যাটেজি চেঞ্জ করেছেন বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা।

গ্রাহকরা বলছেন, মঞ্জুর আলম শিকদার একজন মাল্টি ট্যালেন্টেড প্রতারক। তিনি একটি প্ল্যানে সফল না হলে অন্য প্ল্যান তার রেডি থাকে। এবারও তিনি সে রকম একটি প্ল্যান অ্যাপ্লাই করেছেন। নিজেদের লোকজনকে দিয়ে পোস্ট করিয়ে গ্রাহকদের সামনে ‘মুলো ঝুলানোর’ চেষ্টা করছেন।

তালিকা প্রণয়নে প্রতারণা করছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আলেশা মার্টের টাকা ফেরত দেয়ার তালিকা সংক্রান্ত সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ই-কমার্স খাতের দায়িত্বে থাকা বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছি। যদি আলেশা মার্ট তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এই সকল বিষয়ে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সিটি নিউজ ঢাকা। কিন্তু তাদের কাউকেই ফোন কলে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের নিকট এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে এসএমএস বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর মেলেনি।

এআরআই

আর্কাইভ