• ঢাকা রবিবার
    ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আজ ভূরুঙ্গামারী হানাদারমুক্ত দিবস

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২১, ০৬:১৩ পিএম

আজ ভূরুঙ্গামারী হানাদারমুক্ত দিবস

ফজলুল করিম, কুড়িগ্রাম

আজ ১৪ নভেম্বর। ভূরুঙ্গামারী হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেক মুক্ত হয়। ভূরুঙ্গামারী দেশের প্রথম হানাদারমুক্ত উপজেলা হলেও আজ অবধি মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি। তাই সরকারি স্বীকৃতির দাবি নিয়ে কাজ করছে বিভিন্ন সংগঠন।

আজকের  দিনটি পরবর্তী প্রজন্মকে জানিয়ে দিতে প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় ভূরুঙ্গামারী প্রেস ক্লাব দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে।

দিবসটি পালন উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র‌্যালি, পদক বিতরণ, আলোচনা সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

ওই সময়ের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নং সেক্টরের অধীনে ছিল। ওই সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাহেবগঞ্জ সাব-সেক্টরের মাধ্যমে ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণ দিক খোলা রেখে পশ্চিম, উত্তর পূর্ব দিক থেকে একযোগে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা ভারতীয় বাহিনীর যৌথ নেতৃত্বে প্রবল আক্রমণ শুরু হয়। ১৩ নভেম্বর মিত্র বাহিনীর কামান, মর্টার প্রভৃতি ভারী অস্ত্র দিয়ে গোলা বর্ষণ শুরু হয় এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমান আকাশে চক্কর দিতে থাকে। অবশ্য এর এক দিন আগে থেকেই মিত্র বাহিনীর বিমান শত্রুদের ওপর গোলা বর্ষণ শুরু করেছিল। ভোর হওয়ার আগেই পাক বাহিনীর গুলি বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় পাক সেনারা পিছু হটে পার্শ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ নামক স্থানে অবস্থান নেয়। ১৪ নভেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সিও (বর্তমান উপজেলা পরিষদ) অফিসের সামনে চলে আসে। এ সময় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। যুদ্ধে একজন পাক ক্যাপ্টেনসহ (আতাউল্লা খান) ৪০-৫০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ৩০-৪০ জন পাকসেনাকে আটক করা হয়।

ওই সময় সিও বাসভবন (বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন)-এর দোতলায় তালাবদ্ধ অবস্থায় কয়েকজন নির্যাতিত মহিলাকে উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের অনেকে - মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। একইভাবে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে ১৬ জন নির্যাতিত মহিলাকে উদ্ধার করা হয়।

ভূরুঙ্গামারী দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসেবে সরকারি স্বীকৃতির বিষয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বইউত্তর রণাঙ্গনে বিজয়বইয়ের লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা আকতারুজ্জামান মণ্ডল বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। খুব দ্রুতই এর সমাধান পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

নূর/এম. জামান

আর্কাইভ