• ঢাকা রবিবার
    ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা মেডিকেল থেকে চুরি হওয়া সেই নবজাতক উদ্ধার

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০৯:০৯ পিএম

খুলনা মেডিকেল থেকে চুরি হওয়া সেই নবজাতক উদ্ধার

খুলনা ব্যুরো

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের গেট থেকে চুরির ২৪ দিন পর নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নড়াইলের কালিয়া থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পিলজঙ্গের তোরাব আলী ও রানী বেগমের ছেলে। 

শিশুটিকে বর্তমানে খুমেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ডিএনএ টেস্টের জন্য রাখা হয়েছে। তবে শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হওয়ায় তার টেস্ট হয়নি।


নবজাতকের মামা মোস্তফা বলেন, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরোলিয়া ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর গ্রামের রাশেদ মোল্লার বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। সেনেরবাজারে আমাদের আত্মীয় আছে। তাদের আবার নড়াইলেও আত্মীয় রয়েছে। সেই সূত্রে আমরা সবাইকে জানিয়ে রেখেছিলাম বাচ্চা হারিয়ে গেছে, কোনো জায়গায় যদি বাচ্চা কেনা-বেচা হয় বা কারো বাড়ি যদি বাচ্চা হওয়ার কথা না থাকলেও বাচ্চা দেখে তাহলে যেন আমাদের খবর দেয়। সেইভাবে আমাদের তারা খবর দেয়। আমরা ওখানে যাওয়ার পর নিশ্চিত হয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে কথা বললে তারা অভিযান চালিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে।

যে নারী বাচ্চা কিনেছেন তাকে ও তার স্বামীসহ আরও দুইজন নারীকে সঙ্গে এনে সোনাডাঙ্গা থানায় রেখেছে পুলিশ। তাদের বলেছে তোমরা থানায় চল ডিএনএ চেষ্ট করার পর বাচ্চা তোমাদের হলে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তারা বলেছে, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চা ঢাকা থেকে কিনে এনেছেন। 

শিশুটির বাবা তোরাব আলী ও মা রানী বেগম বলেন, আল্লাহর কাছে আমরা অনেক শুকরিয়া আদায় করছি। এ জন্য পুলিশ ও র‌্যাবসহ যারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা আমাদের বাচ্চা চিনতে পারছি। এটাই আমাদের বাচ্চা।

তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক তোফায়েল হোসেন বলেন, খুমেক হাসপাতাল থেকে গত ২৪ জানুয়ারি বিকেলে ওই নবজাতককে চুরি করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি নবজাতকের নানা বেলায়েত হোসেন মামলা করার পর পুলিশ অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালিয়ার পারকৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় যাদের কাছে শিশুটিকে পাওয়া গেছে তাদের থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। এছাড়া তারা যাদের কাছ থেকে বাচ্চাটি নিয়েছে তাদেরকেও হাজিরের চেষ্টা করা হচ্ছে। শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিচয় নিশ্চিতে খুমেক হাসপাতালের ওসিসিতে ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

গত ২৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনে থেকে এক নবজাতক ছিনতাই হয়। বাগেরহাটের ফকিরহাটের পিলজঙ্গের তোরাব আলী ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুমেক হাসপাতালে তার স্ত্রীকে নিয়ে আসেন। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তার ছেলে হয়। বিকেলে বাচ্চা নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করতে যান তোরাব আলী। 

তখন তার সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় এ্যাম্বুলেন্স চালকের। পরে সেই চালক গাড়ি নিয়ে এসে তাদের নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তিনি আগে যে গাড়ি দেখিয়েছিলেন সেটা না এনে ছোট গাড়ি নিয়ে আসেন। তখন তোরাব আলীর সঙ্গে ওই চালক ও তার লোকদের কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় নবজাতকের নানা, বাবা ও মামার ওপর হামলা চালানো হয়। নবজাতকের খালার কাছে বাচ্চা ছিল। 

সে যখন দেখে তার বাবা ও ভাইকে মারছে তখন অস্থির হয়ে যান। তার পাশে থাকা এক নারী তাকে বলে আমার কাছে বাচ্চা দিয়ে ওদের ঠেকান। তিনি ওই নারীকে তার ভাবি মনে করে বাচ্চা দিয়ে মারামারি ঠেকাতে যান। মারামারি শেষে এসে দেখে বাচ্চাসহ সেই নারী পালিয়ে গেছে।

 

এএল/

আর্কাইভ