 
              প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩, ০৮:৪২ পিএম
-20230921084223.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নামাজ পড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ফিরোজ মোল্যা নামে এক শিক্ষার্থী। তবে আত্মহতার আগে তিনি একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছেন।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রাম থেকে ওই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ফিরোজের লিখে যাওয়া ওই সুইসাইড নোট রাতেই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ফিরোজ বোয়ালমারী সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ২০২২ সালের বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামে নানাবাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন ফিরোজ ও তার ছোট ভাই ফাহিম (১২)।
এলাকাবাসী জানান, শৈশবেই তাদের বাবা নিরুদ্দেশ হয়ে তাদের ছেড়ে চলে যায়। এরপর মা ফিরোজা বেগম তার বাবার বাড়ি চাপলডাঙ্গায় তাদের রেখে অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নানা-নানির মৃত্যুর পর প্রতিবন্ধী এক মামাকে নিয়ে তারা নানাবাড়িতেই বসবাস করছিলেন। ফিরোজ পড়ালেখার পাশাপাশি একটি বেসরকারি ক্লিনিকে দন্ত চিকিৎসকের সহযোগী ও কখনো নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নানাবাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদে আছরের নামাজ আদায় করেন ফিরোজ। পরে বসতঘরের ঢুকে দরজা বন্ধ করে আড়ার সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন়। বিষয়টি পরিবারের লোকজন টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মৃত্যুর আগে ফিরোজ সুইসাইড নোটে লিখে যায়; সেখানে লিখাছিল: ‘আমি জানি আমি কি করছি। জানি আবেগ দিয়ে জীবন চলে না। কিন্তু, আমার কাছে যে আমার স্বপ্নগুলো অনেক দামি ছিলো। হয়তো আমার জীবনের চেয়েও দামি। আমরা যেই সমাজে বসবাস করি সেই সমাজে স্বপ্নপূরণ করতে অনেক টাকা লাগে; নয়তো মা-বাবা থাকা প্রয়োজন; যার কোনোটাই আমার কাছে নেই।’
সুইসাইড নোটে আরও লিখা ছিল, ‘আমি ওকে ভালোবাসতাম। আমার আবেগ মাখা কথাগুলো কারো বিবেকে লাগবে না, সেটা আমি জানি। আর আমি বোকা বলবো সেই সব মানুষদের যারা আমাকে একজন ভালো ছেলে ভাবতেন। আমি আসলে কখনোই ভালো ছিলাম না, শুধু ভালো থাকার অভিনয় করতাম। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। আর কোনো কষ্ট করতে চাই না। তাই এই পথ বেছে নিলাম। আমাকে সবাই ঘৃণা করলেও যেন ভুলে যায়, এটাই আমার শেষ ইচ্ছা! চির বিদায় সবাইকে। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক মো. সরোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে বোয়ালমারী থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থল চাপলডাঙ্গা গ্রামের ফিরোজের বসতঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      