 
              প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৮:১২ পিএম
 
                 
                            
              জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের জন্য জনমত গঠনের আহ্বান জানিয়ে দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু গত ৫৪ বছর আমরা ভোটের অধিকার পাইনি।
মুজিবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল ৫ আগস্ট। এদিন থেকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। সফল ছাত্র আন্দোলনে জালেমরা পালাইছে। কিন্তু দেশে জুলুম এখনো বন্ধ হয়নি। দেশে আল্লাহর আইন চালু হলে জুলুম, নির্যাতন, হয়রানি বন্ধ হবে। দেশে ন্যায় বিচার কায়েম হবে। পুরুষ, মহিলা ও যুবকরা জীবন দিতে শিখেছে। এ দেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে। জেগে ওঠা জনগণ কারও প্রভুত্ব মানবে না।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরার আশাশুনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আশাশুনি উপজেলা জামায়াত আয়োজিত ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই। বিগত জালেম সরকারের লোকজন এখনো বহু জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। এদেরকে সরাতে হবে। যারা ভোটাধিকার হরণ করেছে, গুলি করে মানুষ খুন করেছে, তাদের আগে বিচার করতে হবে। আগে বিচার, তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন। যারা নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়া করছেন তাদেরকে বলব, আপনারা কি আগের মত নির্বাচন চান? না প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান। তিনি বলেন, আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন।
মুজিবুর রহমান বলেন, বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোট দিতে পারেনি। কেন্দ্রে গেলে তাদেরকে বলা হয়েছে, আপনাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে, আপনারা চলে যান। সেদিন যুবকরা কেন্দ্রে গিয়ে তাদের জীবনের প্রথম ভোট দিতে পারেনি। হায়েনার দল যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল, গণতন্ত্রকে তারা বহু দূরে নিয়ে গেছিল। নতুন ভোটার হওয়া যুবকদের ভোট দিতে দেয়নি। সেখান থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছে।
উপজেলা জামায়াতের আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও সাবেক জেলা আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য এড. আজিজুল ইসলাম, এড. আব্দুস সোবহান মুকুল, জেলা অফিস সেক্রেটারী রুহুল আমিন, আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওঃ নুরুল আবছার মোর্তজা প্রমূখ, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আনওয়ারুল হক, কর্ম পরিষদ সদস্য এপিপি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম, সহ সেক্রেটারী প্রফেসর শাহজাহান আলী, ডাঃ রোকনুজ্জামান, মাওলানা আব্দুল বারী, সাবেক সেক্রেটারি এবিএম আলমগীর পিন্টু, পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মাওঃ আতাউর রহমান ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
মুজিবুর রহমান বলেন, ৭১ সাল থেকে গত ৫৪ বছর দেশ মানুষের আইন দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। মানুষের আইনে ভুল থাকতে পারে। কিন্তু আল্লাহর আইনে কোন ভুল নাই। যারা আল্লাহর আইন মানে না তারা কাফের, ফাসেক, জালেম। আগামীতে যদি কেউ আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে মানুষের আইন দ্বারা দেশ পরিচালনা করতে চায় তাহলে সেটা হতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, যারা ইসলামের কথা বলে, তাদের সংসদে পাঠানো গেলে দেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন হবে। আল্লাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর আশাশুনিতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতাকর্মীরা ছিলেন উচ্ছ্বসিত। সকাল ৯টায় জামায়াতের মহিলা কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। পরে বিকাল ৪টায় সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয় উঠে আশাশুনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ । ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রাম থেকে মিছিল সহকারে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন নেতাকর্মীরা।
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      