
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
রাজশাহী মহানগরীর কাদিরগঞ্জ মহল্লায় অবস্থিত ডক্টর ইংলিশ নামে একটি কোচিং সেন্টারে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযানটি চলছে।
কোচিং সেন্টারটি পরিচালনা করছিলেন মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্য (৩৬)। তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সহসভাপতি শফিউল আলম লাটকুর ছেলে। অভিযানকালে অনিন্দ্যসহ দুজনকে যৌথবাহিনী নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বাবা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হলেও চাচাতো ভাই লিটনের প্রভাবেই চলতেন অনিন্দ্য।
অনিন্দ্যের বিরুদ্ধে রাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২ জুন গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। অনিন্দ্য রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত হয়ে দেশের ভেতরে কয়েকটি জঙ্গি হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে ওই সময় পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।
এছাড়া গুলশানের চাঞ্চল্যকর হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্তেও অনিন্দ্যের সম্পৃক্ততা পায় গোয়েন্দা পুলিশ। ওই সময় তাকে রাজশাহী থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক মেয়র লিটনের আত্মীয় হওয়ায় ওই সময় সব মামলা ও অভিযোগ থেকে পুলিশ অনিন্দ্যের নাম বাদ দিয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে অনিন্দ্য নিজের বাড়ির লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় টিনসেড দিয়ে ডক্টর কোচিং সেন্টারটি পরিচালনা করছিলেন। পাশাপাশি গোপনে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুদ ও তৈরির কাজও করে আসছিল। যৌথবাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সকালে অভিযান শুরু করেন। সকালে শুরু হওয়া এ অভিযান দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
সেনাবাহিনী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযানকালে ইতোমধ্যে কোচিং সেন্টারটি থেকে দুটি বিদেশি এয়ার গান, একটি রিভলবার, কার্টুজ, তিন বাক্স শিশা, একটি ম্যাগনেট, ছয়টি দেশীয় অস্ত্র, একটি জিপিএস, চারটি ওয়াকিটকি, একটি ট্রেজারগান, ১০টি সিমকার্ড, একটি বাইনোক্যুলার, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, পাসপোর্ট, এনআইডি কার্ড, ছয়টি মনিটর, তিনটি কম্পিউটার, তিনটি স্ক্যানার ও ৩৫ বোতল মদ জব্দ করেছে।
রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপকমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযান শেষে সেনাবাহিনী বিস্তারিত জানাবেন। তখন আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।