
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:৩৮ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
নীলফামারীর ইপিজেড এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের — ‘চাইলাম ন্যায্য অধিকার, খাইলাম গুলি’, ‘আমার ভাইয়ের বুকে গুলি কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘শ্রমিকের জীবনের দায় কে নেবে?’, ’চাইলাম ভাত, খাইলাম বুলেট’সহ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন, ইবি সংসদের সভাপতি নূর আলম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শ্রমিকরাও আন্দোলনে ছিল। কিন্তু আমরা তাদের প্রাপ্য মর্যাদাটুকু দিতে পারি নি। আমাদের এই পুঁজিবাদী সমাজে শ্রমিকরা সর্বদাই অবহেলিত হয়েছে এবং রক্ত ঝরিয়েছে। ন্যায্য দাবির পরেও যৌথ বাহিনীর হামলায় শ্রমিক নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যাদের টাকায় যৌথ বাহিনী চলছে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, দেশ চলছে তাদের টাকাতেই—তাদের উপর হামলা আমরা সহ্য করবো না। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িতদের চিহ্নিত ও যথাযথ বিচারের দাবি জানাচ্ছি। অভ্যুত্থানের আগে এবং পরেও শ্রমিকরা একই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ইন্টেরিম এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে না পারলে পদত্যাগ করুক।’
জুলাই সংগঠক এস এম সুইট বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ সর্বদাই সকল আন্দোলনে এগিয়ে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও উত্তরবঙ্গের আবু সাঈদ প্রথম শহীদ ছিল। এবং এরপরেই আন্দোলন বেগবান হয়। উত্তরবঙ্গের সাথে সব সরকারই বৈষম্য করেছে। উত্তরবঙ্গের সাথে বৈষম্য করে কেউ বেশিদিন সরকারে থাকতে পারে নি। ক্যাম্পাসের যেসব রাজনৈতিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আছেন, আপনারা কি হাতে চুড়ি পরে বসে আছেন? নয়তো আজকের মানববন্ধনে উপস্থিত থাকতেন। জুলাইয়ের সকল শহীদদের মধ্যে ২৮৪ জন শ্রমিকও রয়েছে। সামরিক বাহিনীর সর্বদাই জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তির উপর ক্ষোভ কেন? ইন্টেরিম সরকারকে অবশ্যই এর দায় নিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকরা টানা চারদিন ধরে ২০ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন। সোমবার কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেন। তবে এতে আন্দোলন থামেনি। মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। এরপর শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শ্রমিক নিহত এবং আহতের ঘটনা ঘটে।