• ঢাকা শুক্রবার
    ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন, কুমিল্লা-৪

বিএনপির ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব কী কাজে লাগাতে পারবেন হাসনাত?

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৫৩ এএম

বিএনপির ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব কী কাজে লাগাতে পারবেন হাসনাত?

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার দেবিদ্বারে তিন ভাগে বিভক্ত বিএনপির রাজনীতি। এই আসন থেকে নির্বাচনে এমপি পদে দাড়াতে পারেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার সংসদীয় আসন বিএনপি নাকি এনসিপি ভাগিয়ে নেবে-এমন আলোচনা চলছে। এদিকে ওই সংসদীয় আসনে সাংগঠনিক পরিকাঠামো এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখভাল করছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির দ্বন্দ্ব কী কাজে লাগাতে পারবেন হাসনাত? তিনি কি কামিয়াব হতে পারবেন? এলাকায় এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। অপরদিকে এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সহিদ।

সরেজমিন জানা যায়, কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার সংসদীয় আসনে বিএনপির তিন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ঘিরে তিন ধারায় পরিচালিত হচ্ছে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ততই দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রতিটি দলীয় কর্মসূচিতে পৃথকভাবে শোডাউন করা হচ্ছে। দলীয় কর্মকাণ্ডে লোকসমাগম ঘটিয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। সাবেক সংসদ-সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি এবং সাবেক ছাত্রনেতা এমএ আউয়াল খান পৃথক তিনটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এর মধ্যে মঞ্জু ও তারেকের গ্রুপ শক্তিশালী। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, বিএনপির ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের সুযোগ কাজে লাগাতে চাচ্ছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। কোনো নেতিবাচক মন্তব্যই তার গন্তব্য ঠেকাতে পারছে না। সব উসকানি ও মন্তব্য পাশ কাটিয়ে তিনি সংগঠনকে তৃণমূল থেকে সংগঠিত করে এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখভাল করছেন। এতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ঘাঁটিখ্যাত দেবিদ্বারে হাসনাত আবদুল্লাহ কি চমক দেখাতে পারবেন, নাকি দ্বন্দ্ব ভুলে একীভূত হয়ে বিএনপি তাদের আসন পুনরুদ্ধার করতে পারবে-ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এলাকায় এমন নানা আলোচনা চলছে।

স্থানীয়রা জানায়, দেবিদ্বার বিএনপির ঘাঁটি। এখানে দলটির ভোটব্যাংক রয়েছে। ধানের শীষ এই এলাকার মানুষের প্রিয় প্রতীক। দ্বন্দ্ব ভুলে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এক হয়ে গেলে দলের পক্ষে ভোট বিপ্লব ঘটতে পারে।

ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর ছেলে এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রেজবীউল আহসান মুন্সী বলেন, আমার বাবার হাত ধরে এই এলাকায় বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের পরিবারের নেতৃত্বে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ আছে।

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি বলেন, দলের জন্য কাজ করছি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার জন্যই কাজ করব। ধানের শীষ প্রতীক যাকে দেওয়া হবে, দেবিদ্বারে তিনিই বিজয়ী হবেন।

এদিকে নবীন প্রার্থী এবং তরুণ সংগঠক হিসাবে ভালোভাবেই সাড়া ফেলেছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সামনের সারির এ নেতা বেশ কৌশলে এগোচ্ছেন। মানুষের মাঝে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে একটা ন্যারেটিভ তৈরির জন্য কাজ করছেন এ বিপ্লবী। আগামী নির্বাচনে তিনি কী ধরনের চমক দেখাবেন-এমন আলোচনা সবার মুখে মুখে।

সম্প্রতি একাধিক উঠান বৈঠকে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, কোনো প্রার্থী যেন জনগণকে ধোঁকা দিতে না পারে, সেজন্য তাদের সচেতন করার কাজ করছি। সে লক্ষ্যে উঠানে রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এনসিপি রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চায়। আগামী নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে, তিনিই সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হবেন।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ