• ঢাকা মঙ্গলবার
    ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির সমাবেশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম

পাবনা-৩ আসনে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির সমাবেশ

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় পৌর শহরের বালুচর মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে চাটমোহর উপজেলা বিএনপির একাংশ। যেখানে চাটমোহর উপজেলা ছাড়াও ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় দীর্ঘদিনের বিভেদ ভুলে মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি  কে এম আনোয়ারুল ইসলাম এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক সদস্য সচিব হাসাদুল ইসলাম হীরা এক মঞ্চ থেকে হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। পরে সমাবেশ শেষে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে একটি বিশাল র‌্যালী পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে। 

সমাবেশে হাসাদুল ইসলাম হীরা তার বক্তব্যে বলেন, ‍‍`কেন্দ্রীয় নেতারা ভুল করেছেন। কিন্তু আমার বিশ্বাস তারেক রহমান সাহেব ভুল করতে পারেন না। আমার প্রিয় নেতাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। পাবনা-৩ এর দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ স্থানীয় কোনো লোককে প্রার্থী দেখতে চায়। যদি পাবনা-৩ আসকে বিএনপির দখলে নিতে হয় তবে এই এলাকার কোনো সন্তানকে মনোনয়ন দিতে হবে, নইলে বিএনপি এই আসন হারাবে। বহিরাগত কোনো মানুষকে আমরা মেনে নেবো না।‍‍`

এ সময় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‍‍`পাবনা-৩ এর মানুষ কোনো বহিরাগত মানুষ চান না। মনোনয়ন এখনো চুড়ান্ত হয় নাই। আমরা কেন্দ্রকে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমরা বহিরাগত প্রার্থী চাই না। মানুষ আমাক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চায়। আমি আত্মবিশ্বাসী, আমি স্বতন্ত্র দাঁড়ালে জিতে যাবো। কিন্তু আমি দলের প্রতি আস্থাশীল। শেষ পর্যন্ত আমি দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করবো। আমার বিশ্বাস দল শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে।‍‍`

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, 

ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক আব্দুল মতিন রাজু, চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আজিজুল হক, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নজির সরকার, ফরিদপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব কাকন, বিএনপি নেতা আবদুল মুত্তালিব, সাইদ উল ইসলাম কাফি, চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম হৃদয়, ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম, চাটমোহর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক রুহুল কবির প্রমুখ।

জানা গেছে, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত পাবনা-৩ আসনের মধ্যে সবচেয়ে ভোটার সংখ্যা বেশি চাটমোহর উপজেলায়। ভোটার সংখ্যা বেশি হলেও বিগত দিনগুলোতে এ উপজেলা থেকে কোনো এমপি পায়নি উপজেলাবাসী। এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে আসছিল এই উপজেলার সাধারণ মানুষ। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর চাটমোহরবাসী স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন বিএনপি থেকে আগামী নির্বাচনে এই উপজেলাবাসী প্রার্থী পাবেন। 

কিন্তু পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও পাবনা-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী  সুজানগরের সন্তান কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। এরপর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মী ও চাটমোহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। বিশেষ করে দুই হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরার অনুসারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। 

অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত হাসান জাফির তুহিনের সঙ্গে কাজ করলেও মন থেকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ক্ষোভ দেখা দেয় চাটমোহর উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

আর্কাইভ