প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৯:৫৮ এএম
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে আটকে পড়া শিশু স্বাধীনকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এর মধ্যে তিনটি এসকেভেটর দিয়ে পাশে ৪০ ফুট গভীর একটি গর্ত তৈরি করে প্রাথমিক কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন মূল গর্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম এসব তথ্য জানান।
গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর তানোরে স্বাধীন নামের দুই বছর বয়সী শিশুটি গভীর গর্তে পড়ে যায়।
স্বাধীন উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবের ছেলে। রাকিব ঢাকায় একটি জুট মিলের ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেন।
জানা যায়, শিশুটি তার মায়ের হাত ধরে কাটা ধান খেতে হাঁটছিল। গত বছর পুকুর পাড়ে গভীর নলকূপের জন্য খুঁড়ে রাখা ৩০-৩৫ ফুট মাটির গর্তে হঠাৎ তলিয়ে যায় সে। এরপর থেকেই পুরো উপজেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। শুরুতে সাড়া পাওয়া গেলেও ধীরে ধীরে সে সাড়া মিলিয়ে যেতে থাকে।
বেলা ৪টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকে। এতে উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত এসকেভেটর দিয়ে মাটি কাটা ও তা সরিয়ে নিতে প্রশাসনকে বেশ বেগ পেতে হয়। ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম।
স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের এই গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এ এলাকায় বর্তমানে গভীর নলকূপ বসানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কোয়েলহাট গ্রামের তাহের নামের এক ব্যক্তি তার জমিতে পানির স্তর পাওয়া যায় কি না তা যাচাইয়ে গর্তটি খনন করেছিলেন। পরে তিনি গর্তটি ভরাটও করেন। তবে বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে সেখানে নতুন করে গর্ত সৃষ্টি হয়। সেই গর্তেই শিশুটি পড়ে যায়।
শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের মোট তিনটি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, আমাদের ফায়ার ব্রিগেডের টিম অনুসন্ধান করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা নিশ্চিত হব ৪০ ফিটের মধ্যে পাচ্ছি কি না। যদি না পাই, এবং শিশুটি আরও গভীরে চলে যায়, তবে বিকল্প পদ্ধতিতে চেষ্টা করব। সেই পদ্ধতিতে শিশুকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
তিনি বলেন, শিশুটি আটকা পড়ার সম্ভাবনা আছে। তার চার ফিট দূরত্বে আমরা টানেল করেছি। সেখানে ভিকটিম আছে কি না আমরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নই, অনুসন্ধান চলছে।
দিদারুল আলম বলেন, গতকালও আমরা সাড়া পাইনি, আজও পাইনি। ৩০ থেকে ৩৫ ফিটের মধ্যে পাওয়া না গেলে, লোকাল অথরিটি ও শিশুর স্বজনরা অনুমতি দিলে মাটির গভীরে লোহার যন্ত্র ব্যবহার করে দেখতে পারি।