 
              প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম
-20230825081529.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ায় পরপর ৪ মেয়াদে ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০০০ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৪, ২০১২ ও আবারও ২০১৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন। বারবার জয়ী হয়ে রাশিয়াকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা লৌহমানব পুতিনের বদনাম করলেই চলে যেতে হয় ওপারে। বিরুদ্ধে গেলেই তৈরি হয় মৃত্যুফাঁদ। এক কথায় রাশিয়ায় পুতিনবিরোধিতা ও সমালোচকদের শেষ পরিণতি মৃত্যু। এমন বেশ কয়েকজন সমালোচকের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় যারা পুতিনের সমালোচনা করেছিলেন।
ইয়েভজেনি প্রিগোজিন : ইয়েভজেনি প্রিগোজিন ছিলেন রুশের ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান। পুতিনের বিরুদ্ধে কথা বলার দুই মাস পর বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। মস্কোর কাছে বিধ্বস্ত হওয়া বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান বলে জানা যায়। এতে প্রিগোজিনসহ ১০ জন নিহত হয়।
পাভেল আন্তভ : কিয়েভ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ধনী রাজনীতিবিদ পাভেল আন্তভ হোয়াটসঅ্যাপে ইউক্রেনের সঙ্গে পুতিনের যুদ্ধের সমালোচনা করেন। বার্তাটি দ্রুত মুছে ফেললেও রেহাই পাননি মৃত্যু থেকে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তার ৬৫তম জন্মদিনের ২৫ দিন পর ভারতের রায়দাগা জেলার একটি হোটেলের জানালা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান।
রাভিল মাগানভ : মার্কিন সংবাদমাধ্যম ও ওয়েবসাইট সিএনবিসি জানায়, রুশের শীর্ষস্থানীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি লুকোইলের চেয়ারম্যান রাভিল মাগানভ প্রকাশ্যে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের সমালোচনা করেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পর কোম্পানিটি সশস্ত্র সংঘাতের দ্রুততম অবসানের আহ্বান জানায়। আন্তভের মতো মাগানভও জানালা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। ২০২২ সালের সেটেম্বরে মস্কো হাসপাতালের জানালা থেকে পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
ড্যান রেপোপোর্ট : মার্কিন সংবাদ ওয়েবসাইট ডেইলি বিস্ট জানায়, রুশ ব্যবসায়ী ড্যান রেপোপোর্ট সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম প্রকাশ্যে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের নিন্দা করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের আগস্টে ওয়াশিংটন ডিসির একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের সামনে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিকোলাই আলেক্সেভিচ গ্লুশকভক : পুতিন সমালোচক নিকোলাই আলেক্সেভিচ গ্লুশকভকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনে তার নিজ বাসভবনে কুকুরের সিসা দিয়ে শ্বাস রোধ করে মেরে ফেলা হয়
মিখাইল লেসিন : রাশিয়ার প্রেস মিনিস্টার মিখাইল লেসিনকে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ওয়াশিংটন ডিসির একটি হোটেল রুমে পাওয়া যায়। ডেইলি বিস্টের মতে, মাথায় জোরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। জানা যায়, ক্ষমতাবানদের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতেন তিনি।
বরিস নেমতসভ : বরিস নেমতসভ ছিলেন রাশিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী। যিনি পুতিনের বড় সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন। ২০১৫ সালে ক্রেমলিনের একটি রেস্তোরাঁ থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে চারবার গুলি করা হয়।
বরিস বেরেজভস্কি : বরিস বেরেজভস্কি রুশ শাসকগোষ্ঠীর একজন ছিলেন। পুতিনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ব্রিটেনে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় পুতিনকে হুমকি দিয়ে যান। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে তার বার্কশায়ারের বাড়ির তালাবদ্ধ একটি বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নাটালিয়া এস্তেমিভোরা : নাটালিয়া এস্তেমিভোরা ছিলেন একজন সাংবাদিক। রাষ্ট্র পরিচালিত (রাশিয়ার) মানবাধিকার লঙ্ঘন উন্মোচনে কাজ করেন। ২০০৯ সালে বাড়ির বাইরে থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে পাশের বনভূমিতে মাথায় গুলির আঘাতসহ মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
স্ট্যানিস্লাভ মার্কেল ও আনাস্তাসিয়া বাবুরোভা : ২০০৯ সালে মানবাধিকার আইনজীবী স্ট্যানিস্লাভ মার্কেল পুতিনের সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্ব করেন। একজন মুখোশধারী বন্দুকধারী তাকে গুলি করে। আনাস্তাসিয়া বাবুরোভা তার সঙ্গেই হাঁটছিলেন। মার্কেলকে সাহায্য করতে যাওয়ায় বাবুরোভাকেও গুলি করা হয়।
আলেকজান্ডার লিটভিনেনকা : একটি ব্রিটিশ তদন্তে পাওয়া যায় আলেকজান্ডার লিটভিনেনকাকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়। পুতিনের কট্টোর সমালোচক ছিলেন।
আন্না পলিটকভস্কায়া : রুশ সাংবাদিক আন্না পলিটকভস্কায়া তার ‘পুতিনের রাশিয়া’ বইয়ে পুতিনের বিরুদ্ধে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করার অভিযোগ করেন। ২০০৬ সালে তার ফ্ল্যাটের বাইরে লিফটের ফাঁকা জায়গায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এমনিভাবে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায় আরও অনেকেরই। পল ক্লেবনিকভ দুর্নীতির বিষয়ে লেখার ফলে ২০০৪ সালে গুলি করে হত্যা করা হয়। ক্রেমলিনের তীব্র সমালোচনা করায় ২০০৩ সালে রুশ রাজনীতিবিদ সের্গেই ইউশেনকভকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অপরাধ ও দুর্নীতি বিষয়ে কথা তদন্ত করেন ইউরি শেকোচিখিন। পরে ২০০৩ সালে রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে মারা যান। ফেডারেল সরকারের নীতির সমালোচনা করার পর রাশিয়ার দৈনিক সম্পাদক ইয়েভজেনি খামাগানভ অব্যক্ত অবস্থায় মারা যান। নিকোলাই আন্দ্রুশচেঙ্কো পুতিনের সমালোচনার জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন। ২০১৭ সালে অজানা আক্রমণকারীদের গণপিটুনিতে মারা যান।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      