 
              প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ১২:২৪ পিএম
 
                 
                            
              ইতালির পুগলিয়ার (আপুলিয়া) দক্ষিণাঞ্চলে একটি মধ্যযুগীয় গ্রামে অবস্থিত বিলাসবহুল বোরগো এগনাজিয়া রিসোর্টে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জি৭ সম্মেলন। জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতারা ছাড়া আরও প্রায় ১০টি দেশের নেতারা বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনা করতে তিনদিনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের এবারের আয়োজক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি সাত সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান- মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রধানকে স্বাগত জানাবেন।
‘আউটরিচ কান্ট্রি’ হিসেবে (প্রায় ১০টি) অতিরিক্ত আলোচনার জন্য আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন- ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমির মোহাম্মদ বিন জায়েদ, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাদজিদ তেবউন, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সম্মেলনে যোগ দেন। এক বিশেষ অধিবেশনে তিনি পশ্চিমা মিত্রদের থেকে আরও সহযোগিতা চাইবেন।
এছাড়া অতিথি হিসেবে থাকছেন পোপ ফ্রান্সিসও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) একটি অধিবেশনের জন্য প্রথমবারের মতো শীর্ষ সম্মেলনে একজন পোপকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিতদের তালিকায় নাম থাকলেও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না সৌদি আরব ও মিসর।
জি৭ সম্মেলনের আগে সেই দেশের সংসদে অভাবনীয় ঘটনা ঘটে গেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা যখন ইতালিতে তখন সেই দেশের সংসদে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেল আইনপ্রণেতাদের। ইতালির অতিডানপন্থী সরকার সেদেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে আরও বেশি স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। আর এ নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে বিবাদ সরকার পক্ষের।
দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও হিন্দুস্তান টাইমসের অনলাইনে খবরে বলা হয়েছে, ইতালির সংসদে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে প্রশ্ন করা ‘নর্দার্ন লিগ’ পার্টির সংসদ সদস্য রবার্টো কলডেরোলির গলায় সেদেশের জাতীয় পতাকা জড়ানোর চেষ্টা করেন বিরোধী ‘ফাইভ স্টার মুভমেন্ট’ দলের ডেপুটি লিডার লিওনার্দো ডোন্নো। সেই সময়, দুই নেতার মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। লিওনার্দোকে ধাক্কা দিতে দেখা যায় বেশ কয়েকজনকে। পরে প্রায় ২০ জন সংসদ সদস্যকে সংসদের ফ্লোরে মারামারি করতে দেখা যায়। সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে এ হাতাহাতির ঘটনায় লিওনার্দো ডোন্নো গুরুতর ভাবে আহত হন বলে জানা যায়। পরে তাকে সংসদের অধিবেশন কক্ষ থেকে হুইলচেয়ারে করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিরোধীদের দাবি, ইতালির বিভিন্ন অঞ্চলকে আরও বেশি করে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হলে তা দেশের অখণ্ডতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে। এদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির দল ‘লিগ অ্যান্ড ব্রাদার্স অব ইতালি’ অভিযোগ করে, লিওনার্দো ডোন্নোর উস্কানিতেই সংসদে এ ঘটনা ঘটেছে। এমনকী লিওনার্দো নিজের আহত হওয়ার বিষয়ে মিথ্যা বলে সমবেদনা কুড়োচ্ছেন বলেও অভিযোগ করে মেলোনির দল। এদিকে লিওনার্দোর দল এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংসদ সদস্যদের ওপরে এ ‘হামলার’ পরিপ্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছে তারা।
দলের প্রধান গিউসেপ্পে কন্টে দাবি করেন, মেলোনির মেজোরিটি বেঞ্চের থেকেই হাতাহাতির ঘটনা শুরু হয়। এদিকে জি৭ সম্মেলনের আবহে ইতালির সংসদে এ ঘটনা ঘটায় সেদেশের বিদেশমন্ত্রী অ্যান্তোনিও তাহানি বলেন, সব সংসদ সদস্যদের নিজেদের সম্মান বজায় রেখে কাজ করা উচিত। সংসদের চেম্বার কোনো বক্সিং রিং নয়। আর মারামারি করে কোনো রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সূত্রও বেরিয়ে আসবে না।
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      