• ঢাকা শুক্রবার
    ০৯ মে, ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

রাফায় বিস্ফোরণে ইসরাইলি সেনা হতাহত, গাজায় নিহত ১০০

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

রাফায় বিস্ফোরণে ইসরাইলি সেনা হতাহত, গাজায় নিহত ১০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণের রাফা শহরে এক বিস্ফোরণে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গোলানি ব্রিগেডের বেশকিছু সদস্য নিহত ও আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গোলানি ব্রিগেডের সেনারা একটি ভবন উড়িয়ে দিতে গিয়ে ওই বিস্ফোরণের শিকার হন।

এদিকে এ ঘটনার ওপর বর্তমানে ইসরাইলি গণমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারিভাবেও কোনো মন্তব্য দেওয়া হয়নি।

তবে রাফা শহরের প্রত্যক্ষদর্শীরা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, সেখানে একটি বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। পরে ইসরাইলি হেলিকপ্টার এসে হতাহত সেনাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

অনেকে মনে করছেন, সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ইসরাইলি সেনা আটকে রয়েছেন। এলাকাটিতে তীব্র সংঘর্ষ চলছে বলেও তারা জানান।

এদিকে হামাস জানিয়েছে, রাফা শহরের পূর্বে আল জেনেইনা এলাকায় তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে অনেকটা মুখোমুখি তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিনিধিও বলছেন, ইসরাইলি বাহিনীর পক্ষে নিহত ও আহতদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ সেখানে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সে অনুযায়ী দখলদার বাহিনীর অংশ হিসেবে একটি গ্রুপ রাফা শহরের বাড়িগুলো পরিকল্পিত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করছিল। এরই একপর্যায়ে তারা একটি ভবনে বিস্ফোরক বসানোর সময় সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে এবং ভবনটি ধসে পড়ে।

তিনি আরও জানান, একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই ভবনে থাকা ইসরাইলি সেনারা বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েন। এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা রাফা সীমান্ত বরাবর হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখেছেন, যা পরে শহরের ভেতরে অবতরণ করে। এ সময় ঘটনাস্থলে ভারি মেশিনগান ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় দীর্ঘক্ষণ ধরে।

এদিকে, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে গাজার চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দেইর আল-বালাহ ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গাজা শহরের পূর্বের শুজাইয়ায় গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।

অন্যদিকে উত্তরের বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হন। একজন নারী ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে বহু গৃহহীন মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আল জাজিরার প্রতিনিধি হানি মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও আশ্রয় নেওয়া লোকজন একই সঙ্গে নিহত হন। অনেকেই গুরুতর আহত ও দগ্ধ হয়ে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে হাসপাতালটি ইতোমধ্যেই রোগীতে পরিপূর্ণ।

তার ভাষায়, ‘একটি পরিবারের ৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। আরও অনেকেই নিখোঁজ বা ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন’।

এদিকে খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে শরণার্থীদের তাবুতে ইসরাইলি গোলাবর্ষণে এক কিশোরী নিহত ও চারজন আহত হন।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলার ফলে সেখানে মানবিক উদ্বেগও বাড়ছে। কারণ ইসরাইলের আরোপিত পূর্ণ অবরোধ খাদ্য সংকটকে চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে, যা গোটা উপত্যকাকে চরম দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ