
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর)–এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে সেনাবাহিনী, চরমপন্থি রাজনৈতিক মতাদর্শে চালিত হচ্ছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।
সম্প্রতি এক জার্মান সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাকিস্তান-ভারতের চলমান বিরোধের মূল কারণ কাশ্মীর সমস্যা, ভারতের রাষ্ট্র-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ এবং হিন্দুত্ববাদী উগ্র চিন্তাধারার উত্থান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের অহংকার ও অযৌক্তিক কৌশল মেনে নেওয়া উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক শক্তিগুলোকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
‘পাকিস্তানে বিদ্রোহ নয়, সন্ত্রাস’
পাকিস্তান আইএসপিআর প্রধানের দাবি, পাকিস্তানে বিদ্রোহ নয়, বরং নিখুঁত সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বেলুচিস্তান হোক বা খাইবার পাখতুনখাওয়া—সব জায়গায় ঘটনার পেছনে ভারতের মদদ স্পষ্ট। ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পাকিস্তান অন্তত ছয়টি ডসিয়ার আন্তর্জাতিক মহলে পেশ করেছে, যাতে ভারতের সম্পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে।’
চলতি বছর পাকিস্তানজুড়ে প্রায় ৪৭ হাজার ৯০০ গোয়েন্দা অভিযানে এক হাজারের বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং ৭৬২ জন প্রাণ হারিয়েছেন—যার মধ্যে প্রায় ৩০০ সাধারণ নাগরিক।
তিনি বলেন, ‘যদি এগুলো দেশীয় সমর্থনেই সীমিত থাকত, এতদিনে শেষ হয়ে যেত। ভারতের বাহ্যিক সমর্থন ছাড়া এসব সম্ভব নয়।’
আফগানিস্তানকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফের দাবি, ভারত আফগানিস্তানকে ঘাঁটি বানিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে এবং বিএলএ ও টিটিপি–কে ব্যবহার করছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান কখনোই রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়নি। ‘আমরা বিশ্বাস করি, সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নেই—মুসলিম, হিন্দু বা খ্রিস্টান—সব সন্ত্রাসী একই।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক
পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র জানান, ওয়াশিংটন অতীতে পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনা কমাতে গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে। ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখছে। ‘আমরা সম্পর্ককে কখনো ‘অথবা-অথবা’ হিসেবে দেখি না,’ মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা সেনাদের ফেলে যাওয়া ৭.২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অস্ত্রশস্ত্র এখন বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ভারতের ভেতরের সমস্যা বাইরে চাপানো
ভারতের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলমানদের ওপর দমন-পীড়নের কথাও উল্লেখ করেন আইএসপিআর মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরে ১০ লাখেরও বেশি ভারতীয় সেনা রয়েছে। ঘরে ঘরে তল্লাশি চলে। অথচ দোষ চাপানো হয় পাকিস্তানের ওপর। এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যাকে বাইরের দিকে ঠেলে দেওয়ার কৌশল।’