 
              প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২, ০৯:৫০ পিএম
 
                 
                            
              লালমনিরহাটে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের পর তাকে নারী পাচারকারীর হাতে তুলে দেয়। এই ঘটনায় বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। বুধবার তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতার আসামিরা হলো- লালমনিরহাট সদর উপজেলার পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেডিয়ামপাড়া (দালালটারী) এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে সামসুল হোসেন বাবলু (৪২) ও একই এলাকার আবুল হোসেন সরকারের ছেলে তসলিম উদ্দিন সরকার (৪০)। ভুক্তভোগী হাতীবান্ধা উপজেলার একটি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। ভুক্তভোগীর মা সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, স্বামী ভরণপোষণ না দেওয়ায় তিনি সন্তানদের নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন। তিনি স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে হাফিজুল ইসলাম নামে একজন। প্রেমের এক মাস যেতে না যেতেই তাকে কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে গত ১ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাটে নিয়ে যায়। সেখানে আনার পর তাকে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য পরিবহন নাবিল কাউন্টারের ম্যানেজার সামসুল হোসেন বাবলুর হাতে তাকে তুলে দেয়। বাবলু স্টেডিয়ামপাড়ায় তার ভাই নুরুজ্জামানের বাসায় নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এরপর চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে নাবিল গাড়িতে ঢাকা পাঠায়।
রোমহর্ষক বর্ণনায় ভুক্তভোগী দাবি করেন, ‘গত ১ সেপ্টেম্বর হাফিজুল মোবাইল ও কিছু কেনাকাটা করে দেয়ার জন্য ট্রেনে করে লালমনিরহাট নিয়ে যায়। পাশে থেকে আসার কথা বলে আমাকে সেনামৈত্রী মার্কেটে বাস স্ট্যান্ডের নাবিল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বাবলুর কাছে বসিয়ে রাখে। হাফিজুল আমাকে ডাকছে এই কথা বলে সন্ধ্যায় আমাকে একটি রিকশায় করে স্টেডিয়ামাপাড়ার একটি জনহীন বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। পরে তসলিম নামে আরও একজনকে নিয়ে আসে। আগে বাবলু ও পরে তসলিম ধর্ষণ করে। এরপর চা খাওয়ায়। আর কিছু বলতে পারি না। পরে দেখি আমি ঢাকায়।’
ভুক্তভোগীর মা দাবি করেন, হাফিজুল ইসলাম তাকে কেনাকাটা করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লালমনিরহাটে নিয়ে যায়। সেখানে নারী পাচারকারী চক্রের লোকজনের কাছে আমার মেয়েকে তুলে দিয়ে সটকে পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে চায়ের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তাকে নাবিল গাড়িতে ঢাকায় পাচার করে। পরে সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমার মেয়েকে উদ্ধার করে। আমি ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।’
ভুক্তভোগীকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেই বাড়িটি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট সদর থানার ওসি এরশাদুল আলম।
অভিযানে অংশ নেওয়া লালমনিরহাট সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই আসামি মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তাকে ফরিদপুরের এক নারী পাচারকারী সদস্যের মাধ্যমে নাবিল গাড়িতে ঢাকায় পাঠানোর কথাও স্বীকার করেছে। ওই ব্যক্তি তাকে ঢাকার গাবতলীতে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগেই পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে তার অসুস্থ অবস্থা দেখে মেডিসিন ও নিউরোলজি চিকিৎসককে দেখানো হয়। পরে মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে রাতেই এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আসামিদের গ্রেফতার করি।’ এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবেই তদন্ত করছি। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, মেয়েটিকে পাচার করার উদ্দেশে একটি চক্র সক্রিয় ছিল। অন্য আসামিদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
এএল/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      