• ঢাকা সোমবার
    ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

গরমের উত্তাপেও কক্সবাজারে বিপুল পর্যটক সমাগম

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৪, ১১:১১ পিএম

গরমের উত্তাপেও কক্সবাজারে বিপুল পর্যটক সমাগম

কক্সবাজার প্রতিনিধি

ঈদুল ফিতরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটি। পাঁচ দিনের ছুটিতে চাকরিজীবীদের মাঝে খুশির আমেজ বাড়লেও হতাশ কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। 

কারণ, পাঁচ দিনের ছুটির প্রথম দুদিন ঈদ ও ঈদের পূর্ব দিন, এক প্রকার পর্যটক শূন্যই গেছে। সপ্তাহিক ছুটিতে আগে থেকেই শুক্র ও শনিবার বুকিং থাকত বেশ। পূর্ব ধারাবাহিকতায় শুক্রবার গরম উপেক্ষা করে বিপুল পর্যটক সমাগম হয়েছে কক্সবাজারে। এ ধারা থাকবে আগামীকালও, এমনটি প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।

অতীতে পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম সচল থাকত। তখনো পর্যটকে ভরে থাকত কক্সবাজার। তবে, এবারের বৈশাখ, চৈত্রের খরতাপে প্রকৃতিকে জ্বালিয়ে ছারখার করছে।

এপ্রিলের রুদ্রমূর্তি ধারণ করা সময়ে শুরু হওয়া পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ বরণে পূর্বের ধারায় এবারও তিনদিনের বৈশাখী মেলার আয়োজন করছে পর্যটন জোনের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। পার্কিং এলাকায় নাগরদোলা, লবিতে বৈশাখ ঐতিহ্যের মেলার নানা স্টল বসছে। বৈশাখী সাজে সাজানো হয়েছে হোটেলে পার্কিং এলাকাসহ চারপাশ। বিনোদনে থাকছে জলের গান শিল্পী গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনও।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, এবারের রমজানের মাঝামাঝি সময় হতেই তীব্র তাপদাহ চলছে। ফলে অন্য সময়ের রমজানের চেয়ে পর্যটক শূন্যতায় ছিল কক্সবাজার। আর ঈদের প্রথম দিনেও তেমন কোনো জন কোলাহল ছিল না বলা যায়। ফলে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও পর্যটক নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা ছিল। কিন্তু শুক্রবার সকাল হতে পর্যটন এলাকায় জনসমাগম বেড়েছে। গরম উপেক্ষা করেই বেলাভূমি লোকারণ্য হয়ে আছে। এ ধারা আরও দুদিন থাকবে বলে আশা করছি আমরা।

ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে পরিবার নিয়ে আসা ফাহিম রহমান বলেন, ঈদের দিন আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে আসেন তাই কোথাও বেড়ানো হয় না। কর্মস্থল হতে ছুটি পাওয়াও কষ্টসাধ্য। তাই তাপদাহ জেনেও দুই দিনের জন্য শুক্রবার পরিবার নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। প্রচন্ড রোদ, এরপরও ঢেউয়ের সান্নিধ্য পেয়ে তা রোদ বলে মনে হচ্ছে না। বাচ্চা ও পরিবার খুবই উৎফুল্ল মনে সবকিছু উপভোগ করছে।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, রমাজানের পর পর্যটক বরণে নগরীর আবাসান ও খাবারের ঘরগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। প্রস্তুতি নেয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-হকাররাও। মাস দেড়েক ধরে সুনসান নিরবতায় থাকা সৈকত জুড়ে কোলাহল মুখর পরিবেশের আশায় সবার পূর্ব প্রস্তুতি ছিল উল্লেখ করার মতো। কিন্তু পূর্বের সেই আশা পূরণ না হলেও শুক্রবার উল্লেখ করার মতো পর্যটক এসেছে কক্সবাজারে। 

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। রোজা শেষ হবার আগে ১২-১৩ এপ্রিলের জন্য ৮০-৯০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছিল। টানা বন্ধ হলেও এ দুদিন একটু বেশি চাপ থাকবে বলে আশা করছি। তবে, পহেলা বৈশাখও পর্যটক উপস্থিতি মোটামুটি থাকবে বলে আশা করা যায়। সব মিলিয়ে এ দিন তিনেকে কয়েক লাখ পর্যটক আসতে পারে। 

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকের নিরাপত্তা ও সেবায় সৈকত এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষনিক টহল রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগমের কথা মাথায় রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। সৈকতে পর্যটকদের ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করেছি আমরা। বিপদাপন্ন কোনো পর্যটক একটি বাটন টিপেই সেবা নিশ্চিত করতে পারবেন। 

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ