
প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের জন্য আন্দোলতরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিগুলো প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশিদ।
সচিবালয়ে চলমান সংকট নিরসনে গঠিত সচিব কমিটির আহ্বায়ক ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে দেখা করলে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ভূমির সিনিয়র সচিব সালেহ আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, গতকাল কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে কর্মচারীরা যেসব দাবি-দাওয়া তুলেছেন বা সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে কর্মচারীরা যেসব কথা বলছেন তিনি সেসব বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অবহিত করেছেন। সব শুনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ভূমি সচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে জানিয়েছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা ৩১ মে জাপান থেকে দেশে ফিরবেন।
এরপর তিনি সচিব কমিটির সদস্যদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে কর্মচারিদের দাবি তথা আপত্তির বিষয়টি অবহিত করবেন। প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেই সেই আলোকে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরাও সরকারের কর্মচারী। বিষয়টা যেহেতু সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়, সেহেতু সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একদিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন মঙ্গলবার। সচিবালয়ে সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল পৌনে ৩টায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমির সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক শুরু হয়। তার সঙ্গে বৈঠকে সরকারের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব।
সচিবালয়ে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ বেশ কয়েকজন সচিবকে নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় ৭ সদস্যের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সভা থেকেই কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে ভূমি সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান কর্মচারীরা। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়ারা বলেন, কালাকানুন যুক্ত করে প্রণীত অধ্যাদেশ কেউ মানবে না। ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। এই বাতিল বিধান পুনরুজ্জীবিত করার মানে নতুনভাবে বিতর্ক তৈরি করা। বর্তমান সরকার সেই কাজটিই করেছে। এর ফলে কর্মচারীদের অধিকার খর্ব হবে, তারা কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়বে। কাজেই এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো মূল্যে এটা প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের সব রুমে তালা দেবেন বলে ঘোষণা করেন।