• ঢাকা মঙ্গলবার
    ০১ জুলাই, ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

মেট্রোরেল নির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকারের বাজিমাত

প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম

মেট্রোরেল নির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকারের বাজিমাত

সিটি নিউজ ডেস্ক

মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশে ট্রেন চালু হতে সময় লাগবে আরও দেড় বছর। এ পথে রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেত ব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজে ঠিকাদার বাড়তি ব্যয় দাবি করার কারণে জটিলতা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত দর-কষাকষি করে ১৮৬ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। প্রস্তাবিত দরের চেয়ে যা প্রায় ২৯ শতাংশ কম। ফলে ৪৬৫ কোটি টাকায় ঠিকাদার নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত।

বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল চলাচল করছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের দূরত্ব ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশে উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণকাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেত ব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ শেষ হলে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশে রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থা স্থাপনসহ যৌথভাবে অন্যান্য কাজ করেছে জাপানের মারুবিনি করপোরেশন এবং ভারতের লারসন অ্যান্ড টুবরো। বর্ধিত অংশও তাদের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এ ক্ষেত্রে তা বাড়তি কাজ (ভেরিয়েশন) হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়। গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণে তাদের নিয়োগ দিতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিকাদারের বেশি দর প্রস্তাবের বিষয়টি সামনে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই কাজের জন্য মারুবিনি ও লারসন অ্যান্ড টুবরো গত বছর ১৭ জুলাই প্রথম প্রায় ৬৫১ কোটি টাকা দর প্রস্তাব করে। প্রথম দফায় দর-কষাকষির পর গত ডিসেম্বরে ৬৪৩ কোটি টাকায় নামে তারা। এরপরের ধাপে আরও কিছু কমিয়ে গত জানুয়ারিতে ৬৩৪ কোটি টাকা দর প্রস্তাব করে। 

এরমধ্যে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে সরকার অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ফারুক আহমেদকে নিয়োগ দেয়। তার ভারত, হংকং, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে দর-কষাকষির নির্দেশনা দেয়। ব্যয় কমানো না গেলে প্রয়োজনে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানেরও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, নতুন করে দর-কষাকষি শুরুর পর ৫৯০ কোটি টাকায় নামে ঠিকাদার। কিন্তু তাতেও সরকার রাজি হয়নি। আরও তিন মাস দর-কষাকষির পর দর প্রস্তাব দাঁড়ায় ৪৬৫ কোটি টাকা। গত ১৬ জুন মারুবিনি ও লারসন অ্যান্ড টুবরোর পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে এ দর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ দর এখনো সরকারের পর্যালোচনায় আছে। যদিও এ কাজের জন্য শুরুতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২৭৪ কোটি টাকা।

ডিএমটিসিএল এমডি ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, কমলাপুর পর্যন্ত দ্রুত মেট্রোরেল চালু করা যেমন তাদের অগ্রাধিকার, তেমনি কম খরচে কাজটি শেষ করাও বড় লক্ষ্য। ঠিকাদারের সর্বশেষ দর প্রস্তাব সম্পর্কে আলোপ-আলোচনা চলছে। শিগগিরই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে।

মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২২ সালে। উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় পরের বছর, ২০২৩ সালে। চুক্তি অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাসে এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে কাজের গতি কম হওয়ায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

আর্কাইভ