প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে এবং রেমিট্যান্স পাঠানোর সার্বিক খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে প্রবাসীদের পাঠানো সব ধরনের রেমিট্যান্সের সার্বিক খরচের তথ্য সংগ্রহ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রবাসীদের বিদেশ থেকে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর মাধ্যমে বা অন্যান্য প্রক্রিয়ায় পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রতিটি লেনদেনের তথ্য-উপাত্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পৃথক দুটি ছক করে দিয়েছে। এ ছক অনুযায়ী প্রতিদিনের তথ্য পরবর্তী দিনে দুপুর ১২টার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে হবে।
এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ নির্দেশনা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের খরচ সংগ্রহ করছে। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের খরচ বাড়ছে। এখন খরচ নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব তথ্য সংগ্রহ করছে।
রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ বিভিন্ন ধরনের ফি আরোপ করছে। এর বিপরীতে কর আরোপের বিধানও রয়েছে। দেশেও ব্যাংকগুলো লেনদেনের বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস চার্জ আদায় করছে। এসব কারণে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
সার্কুলারে বলা হয়, প্রবাসীদের প্রতিদিনের পাঠানো প্রতিটি লেনদেনের তথ্য পরবর্তী দিনে দুপুর ১২টার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে হবে। বিদেশ থেকে যেসব এক্সচেঞ্জ হাউস বা ব্যাংক থেকে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে সেসব তালিকাও হালনাগাদ করে নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।
এসব তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে তারিখ, রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যাংকের বা এক্সচেঞ্জ হাউসের নাম, লেনদেন করার উপকরণ, রেমিট্যান্সের অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতি, টাকায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ, টাকায় প্রণোদনার পরিমাণ, ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার, ডলারের রেমিট্যান্সের পরিমাণ, কোন মুদ্রায় রেমিট্যান্স পাঠানো হলো, রেমিট্যান্স ফি, রেমিট্যান্সের বিপরীতে আরোপিত ভ্যাট বা কর, টাকায় অন্যান্য খরচ, টাকায় মোট রেমিট্যান্স খরচ ও ডলারে মোট রেমিট্যান্স খরচ।
সূত্র জানায়, এসব তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে কিভাবে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমানো যায়। বর্তমানে দেশে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের অর্থ তাদের হিসাবে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কোনো ফি আদায় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে খরচ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে। এছাড়া বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো রেমিট্যান্সের অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার একেকভাবে নির্ধারণ করছে। এ ক্ষেত্রেও সমতা আনার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।