• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২২ মে, ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তারেক রহমানকে নিয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া রিজভীর

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম

তারেক রহমানকে নিয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া রিজভীর

সিটি নিউজ ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও বিদেশি নাগরিক বলতে হবে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ফ্যাসিবাদের প্রতিভূ হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্রকে কফিন পরিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটাতেন, উপদেষ্টার এই মন্তব্য যেন তারই পুনরাবৃত্তি। এখনো যেন লোকমানসে উজ্জ্বলতর তারেক রহমানের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার জন্য প্রতিশোধের চোরাবালিতে আঘাত হানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক।  ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গাওয়ার মতো ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, কেবল আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয় আপনি বিদেশি নাগরিক, তাহলে কালকে তারেক রহমান সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ড. খলিলুর রহমানের এহেন বক্তব্য নিঃসন্দেহে আত্মগরিমার প্রদর্শন এবং দুরভিসন্ধিমূলক। 

রিজভী বলেন, তারেক রহমানের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্ট, জনসাধারণকে বিভ্রান্ত এবং মানুষের মাঝে তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে নিয়েই এই বক্তব্য রেখেছেন খলিলুর রহমান, যা দুর্ভাগ্যজনক বিভ্রান্তির কবলে পড়েছে। তাকে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদের অনুকূল সমাজভূমি নয়। তিনি তার কথাবার্তায় এবং আচরণে বিগত কিছু দিনে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করতে শুরু করেছেন।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা আরও বলেন, খলিলুর রহমানের মতো একজন বিতর্কিত এবং করিডোর চ্যানেল-বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের কুশীলব বলে পরিচিত ব্যক্তি কীভাবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান? খলিলুর রহমানের অজানা থাকলেও দেশবাসীর অজানা নয় যে, তারেক রহমানকে কী কারণে এবং কোন পরিস্থিতিতে লন্ডন যেতে হয়েছে। সেখানে থেকে তারেক রহমানকে বিশ্বের নিষ্ঠুরতম একটি জগদ্দল ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে।

তারেক রহমান তার জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কারণে দেশে ফিরতে পারেননি বলে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এখানে আরও উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের অধীনে পর্যটক, কর্মক্ষেত্র, ছাত্র, বিনিয়োগকারী এবং পরিবার বা শরণার্থী ভিসাসহ ভিসা বিভাগের অধীনে একজন বিদেশি নাগরিকের জন্য যুক্তরাজ্যে স্বল্প সময়ের (ছয় মাস), বর্ধিত সময়ের জন্য বা অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাস করা আইনত বৈধ।

তিনি বলেন, তারেক রহমান বারবার স্পষ্ট করে বলেছেন, জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন। সমর্থন অব্যাহত রাখার পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে হচ্ছে এই সমর্থনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের কেউ কেউ মনে হচ্ছে, বিএনপির সঙ্গে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাধাতে চায়।

এরপর রিজভী বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলতে চাই, আপনি এমন একজন ব্যক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন দেশের জন্য, যার কোনো দৃশ্যমান অবদান নেই। তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নন, বিদেশের জন্য কাজ করবেন। মানবিক করিডোর বা চ্যানেল নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশকে অস্থির করার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু আমরা তা হতে দেবো না।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ড. খলিলকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেশের জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।

আর্কাইভ