
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, গত বছর অগাস্টে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি ওই প্রস্তাবে সম্মত হননি।
আজ বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই দাবি করেছেন। তিনি তিনটি বিষয়ে লিখেছেন এই পোস্টে।
মি. ইসলাম লিখেছেন, “বিএনপি মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল সম্প্রতি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন জাতীয় সরকারের কোনো প্রস্তাবনা ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয় নাই। তারা অন্য মাধ্যমে এ প্রস্তাবনা পেয়েছিল। এই বক্তব্যটি সত্য নয়।“
“৫ই অগাস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিং এ আমরা বলেছিলাম আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই প্রেস ব্রিফিং এর পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সাথে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয় সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে,“ লিখেছেন তিনি।
উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেওয়ার আগে তারেক রহমানের সঙ্গে আরেকটি মিটিং এ প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা/পর্যালোচনা হয় বলেও লিখেছেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম শিবির নেতা সাদিক কায়েমের একটি দাবির কথা উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি লিখেছেন, “সম্প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল, শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার।”
“ঢাবি শিবিরের সাথে যোগাযোগ ছিল” দাবি করে তিনি দাবি করেছেন, “যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহোযোগিতা করা মানে এই না যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।”
সাদিক কায়েম বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিলেন না দাবি করে নাহিদ ইসলাম লিখেছন, “কিন্তু ৫ই অগাস্ট থেকে এই পরিচয় সে ব্যবহার করেছে।”
“এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই,” পোস্টে উল্লেখ করেছেন মি. ইসলাম।
ফেসবুকেওই পোস্টে সেনাবাহিনীকে নিয়েও লিখেছেন তিনি। “একটা আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা” দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে তিনি লিখেছেন।
নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, “আমাদের ভিতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রুপের কাছে দেওয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। ৫ই অগাস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি।“
“পাল্টা নেতৃত্ব” দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে দাবি করে তিনি লিখেছেন, “কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভাইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা হেন কোনো কাজ নাই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে এ দেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হইছে কিনা জানা নাই। কিন্তু মিথ্যার উপর দিয়ে বেশিদিন টিকা যায় না। এরাও টিকবে না।“