
প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
চিকিৎসা সেবা না পেয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাংচুর ও হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে রোগির স্বজনরা । শনিবার (৩ মে) সাতক্ষীরা জেলা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্টাফদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ফয়সাল আহমেদ জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের লাবসা এলাকার শাহিন নামে এক রোগী মাথায় আঘাত নিয়ে জরুরি বিভাগে আসেন। ওই সময় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ইনডোরে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা জরুরি বিভাগে ফিরে এসে স্টাফদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেন।
তিনি আরো জানান,এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা কর্তব্যরত অফিস স্টাফ ফরিদ, মাসুদ, নার্স সোহানা পারভিন, মর্জিনা খাতুন এবং ঢাকা থেকে আসা ডা. তানভির হাসান নামে একজনকে পিটিয়ে জখম করে।
আহত তানভির হাসান জানান, হঠাৎ করেই দেখি এক রেগির স্বজনরা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে মারপিট করে উদ্যত হয়। ওই সময় তিনি তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করতে থাকেন। এতে একজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার নাকে ঘুষি মারে। এতে তার নাকে হাড় ভেঙে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল আসে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, একজন মারামারির রোগী মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে আসে। ইমারজেন্সি ট্রিটমেন্ট করে আমরা তাকে ওয়ার্ডে পাঠাই। কিন্তু ওয়ার্ডে পৌঁছেই রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কেন ডাক্তার আগে থেকে উপস্থিত ছিল না এই অভিযোগ তুলে। এরপর তারা নিজেরাই এসে ইমারজেন্সি ভাঙচুর করে ও আমাদের স্টাফদের মারধর করে। এমনকি ঢাকার একজন চিকিৎসক, যিনি একটি সার্ভের কাজে সাতক্ষীরা এসেছিলেন, তাকেও মারধর করে রক্তাক্ত করে।এ ঘটনার পর জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই সময় প্রশাসন দেখে হামলাকারীরা সটকে পড়ে। এ ঘটনায় নাস মর্জিনা খাতুন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা(ওসি)শামিনুল হক জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তবে স্থানীয়দের দাবি, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহেল আহমেদ মানিক ।এ ঘটনায় জেলার সর্বস্তরে চরম ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যসেবা সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এদিকে বিএনপির এক সুত্র জানায়, ঘটনার পরে ওই স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা সোহেল আহমেদ মানিককে বহিষ্কার করে চিঠি দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী।