• ঢাকা রবিবার
    ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

উপার্জনের একমাত্র সম্বল ভ্যান হারিয়ে কাঁদছে কিশোর কাজল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩, ১০:৩৭ পিএম

উপার্জনের একমাত্র সম্বল ভ্যান হারিয়ে কাঁদছে কিশোর কাজল

দেশজুড়ে ডেস্ক

চুয়াডাঙ্গা শহরের জিনতলা মল্লিকপাড়া থেকে কাজল (১৬) নামে এক কিশোরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চুরির ঘটনা ঘটেছে। আয়ের একমাত্র সম্বল ভ্যান হারিয়ে এখন দিশেহারা এই কিশোর।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে যাত্রীদের অনুরোধে ভ্যান থামিয়ে ডিম আনতে গেলে কৌশলে কাজলের ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় যাত্রীবেশী চোর। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভ্যান না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কিশোর কাজল। তার এই অবস্থা দেখে চারপাশে জড়ো হয় স্থানীয়রা। কিন্তু কারো আশ্বাসেই থামছে না কাজলের কান্না।

কাজল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের কিরণগাছি গ্রামের মো. লাল্টুর ছেলে।

কাজল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সকালে সদরের সরোজগঞ্জ বাজার থেকে এক বৃদ্ধসহ দুজন আমার ভ্যানে চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড়ে আসেন। সেখান থেকে জিনতলা মল্লিকপাড়ায় নিয়ে যেতে বলেন। এসময় একজন টাকা দিয়ে দোকান থেকে ডিম কিনে আনতে বলেন। ডিম নিয়ে এসে দেখি ভ্যান নেই। অনেক খুঁজেও ভ্যান পাইনি বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কাজল।

কাজল আরও বলেন, তিন ভাইবোনের মধ্যে আমি সবার বড়। আমার বাবা ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। সেটা দিয়ে সংসার চলে না। তাই বাড়ি থেকে ভ্যান কিনে দিয়েছে। এই ভ্যান চালিয়েই সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছি। এখন ভয়ে বাড়িতেও যেতে পারছি না। বাবা-মা আমাকে বকাঝকা করবেন। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

আরাফাত নামে স্থানীয় এক যুবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এলাকা থেকে কাজলের ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে। এই অল্প বয়সে যেহেতু সে ভ্যান চালাচ্ছে তাহলে বুঝা যায় তার পরিবার খুবই অসহায়। ভ্যান চুরির পর তার কান্না দেখে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও পাইনি। পরে সদর থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ করেছি।

এদিকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করছে।

কাজলের মা ঝর্ণা খাতুনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিবেদকের। ভ্যান চুরির কথা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কাজলের মা। তিনি বলেন, কাজলের বাবা ভাঙ্গারির ব্যবসা করে সংসার চালাতে হিমশিম খায়। তাই বাড়িতে থাকা গরু বিক্রি করে কাজলকে ভ্যান কিনে দিয়েছি। প্রতিদিনই উপার্জনের টাকা সংসারে দিচ্ছিল কাজল। এখন কীভাবে কী হবে বলেই আবারো কান্নায় ভেঙে পড়তে শোনা যায়।

তিনি আরও বলেন, ছেলেটা আমার পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। অভাবের সংসারে পড়াশোনা করাতে পারিনি। বাধ্য হয়েই ভ্যান কিনে দিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহব্বুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ তৎপর রয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আর্কাইভ