• ঢাকা মঙ্গলবার
    ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

প্লাস্টিক গলিয়ে ডিজেল ও পেট্রোল তৈরি করছেন ছয় বন্ধু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৮:৩০ পিএম

প্লাস্টিক গলিয়ে ডিজেল ও পেট্রোল তৈরি করছেন ছয় বন্ধু

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের ভালকুায় ছয় বন্ধু মিলে প্লাস্টিক বর্জ্য গলিয়ে তৈরি করছেন বিকল্প জ্বালানী তেল ডিজেল ও পেট্রোল। কোনও ধরনের গবেষণা ছাড়াই শুধু মাত্র ইউটিউব দেখে নিজস্ব প্ল্যান্টে তৈরি করা এই জ্বালানী ব্যবহার করছেন নিজস্ব মোটরসাইকেল ও পাওয়ার ট্রিলারে।

উপজেলার মল্লিকবাড়ি এলাকায় বিকল্প জ্বালানী তেল উৎপাদনের এই কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে স্থাপন করা ব্রয়লার চুল্লিতে উচ্চ তাপ সৃষ্টি করতে বায়োগ্যাসের মাধ্যমে দেয়া হয় আগুন। প্রায় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পাশাপাশি ২টি চুল্লিতে গলানো হয় বিভিন্ন ধরনের ৫০০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য। টানা ৩ ঘন্টা জ্বালানোর পর প্লাস্টিক গলে এক পর্যায়ে সৃষ্টি হয় বাষ্প। বাষ্প থেকে সৃষ্ট বায়োগ্যাস আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়, আর প্লাস্টিক গলে তরল পদার্থ পাইপ লাইনের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়ে তৈরি হয় ডিজেল।

এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা বিল্লাল হোসেন সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, বিকল্প পদ্ধতিতে তৈরি করা এই ডিজেল আবারও চুল্লিতে গরম করলে তীব্র গরমে তা থেকে পরিশোধন হয়ে সৃষ্টি হয় পেট্রোল। খনি থেকে পাওয়া জ্বালানী তেল আর বিকল্প জ্বালানী তেলের পার্থক্য সাধারণ দৃষ্টিতে বোঝার উপায় নেই। কোনও ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা না করায় এই জ্বালানী এখন নিজেরাই ব্যবহার করছি। এটাকে আরও বেশি ব্যবহারোপযোগী করতে বিদেশ থেকে রিফাইন মেশিন কেনার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

এই জ্বালানী বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারোপযোগী করতে উচ্চতর গবেষণার বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদ সিটি নিউজ ঢাকাকে জানান, বিকল্প পদ্ধতিতে উৎপাদিত এই জ্বালানী বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী কিনা এবং পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকারক কিছু আছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে। এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে জেলা প্রশাসন আগ্রহী বলেও জানান তিনি।

উদ্যোক্তারা মনে করছেন, জ্বালানী তেল তৈরির মাধ্যমে ক্ষতিকারক প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ হওয়ায় জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ হওয়ায় তা পরিবেশের জন্যও ইতিবাচক।

বিভিন্ন স্থান থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য কুড়িয়ে এবং বিভিন্ন ক্যাবল কারখানা থেকে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে প্লাস্টিক কাঁচামাল হিসেবে কিনে আনছেন তারা। ৫০০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদন হয় ২০০ থেকে ২৫০ লিটার। বিকল্প পদ্ধতিতে প্রতি লিটার ডিজেলের উৎপাদন খরচ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এছাড়া পেট্রোলের উৎপাদন খরচ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, যা বিদেশ থেকে আমদানি করা খনিজ জ্বালানী তেল থেকে অনেক সাশ্রয়ী।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ