• ঢাকা মঙ্গলবার
    ১৩ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ বীজ আলু চাষীদের দাম কম দেয়ার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম

বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ বীজ আলু চাষীদের দাম কম দেয়ার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চুক্তিভিত্তিক চাষীদের বীজ আলুর মূল্য গত বছরের তুলনায় কম দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় জোনের চুক্তিভিত্তিক চাষীবৃন্দের ব্যানারে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আধাঁ ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করা যায়। এতে বিএডিসির পঞ্চগড় জোনের ৩১ জন বীজ আলু চাষী অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বিএডিসির আলু চাষী আব্দুল মতিন, মাসুদ সরকার, সাজ্জাদ হোসেন মুখে বক্তব্য রাখেন। 
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেশি দরে বীজ আলু ক্রয় করে উৎপাদিত আলু কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ আলু চাষীরা। এতে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন।

এমতাবস্থায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে বীজ আলুর দর পুনর্বিবেচনার দাবি করছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমরা বিএডিসি থেকে ভিত্তি বীজ ক্রয় করেছিলাম ৪৮-৫৪ টাকা দরে। ওই সময় উৎপাদিত বীজ আলুর দাম পেয়েছি ৩৫-৩৭ টাকা কেজি। অথচ বাইরে আলুর দর ছিল ৭০-৮০ টাকা। কিন্তু আমরা বিএডিসির সাথে চুক্তিবদ্ধ বিধায় বাইরে কোনো আলু বিক্রি না করে বিএডিসির চাহিদামতো আমরা বীজ সরবরাহ করেছি। যার ফলে বিএডিসি ব্যাপক লাভবান হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিএডিসি ভিত্তি বীজের দাম নিয়েছে ৬০-৬২ টাকা দরে। এতে উচ্চমূল্যে বীজ সার, কীটনাশক ব্যবহার করে উৎপাদন খরচ বেড়ে অঞ্চল ভেদে দাঁড়িয়েছে ৩০-৩৫ টাকা। তাছাড়া বীজ আলুর উৎপাদনে বিশেষ যত্ন নিতে হয় এবং উৎপাদন একটু কম হয়। অথচ এবার দর নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬- ২৮ টাকা। গত বছরের থেকে প্রতি কেজিতে দুই টাকা বাড়িয়ে ৩৭-৩৯ টাকা দর নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। দাম যদি বাড়াবনো না হয় তাহলে আগামী বীজ আলু উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে চাষীরা। তাছাড়া ১০ একরের নিচে কোনো চাষ চুক্তিবদ্ধ হতে পারে না। বাধ্য হয়ে জমি লিজ নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। এতে আরও উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। পঞ্চগড় জোনে বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষির সংখ্যা ৩০ জন। আলু চাষ করেছে তিনশ একরের বেশি জমিতে।

বক্তারা আরো বলেন,  ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চুক্তিভিত্তিক চাষী বীজ আলুর চাষীদের কাছ থেকে বীজ আলু প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে কিনেছিলেন। তবে এবার ২০২৪-২০২৫ প্রতি কেজিতে ৮ টাকা কম দিয়ে ২৬ টাকা দিচ্ছে। বিএডিসি কারো সাথে পরামর্শ না করেই নিজেরাই এই মূল্য নির্ধারণ করেছেন। অথচ গত বছরের তুলনায় সার ও কীটনাশকের দাম অনেক বেড়েছে। শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। একজন কৃষক মূলত নিজের জমির সাথে আরো জমির লিজ নিয়ে বীজ আলু উৎপাদন করে থাকে। জমি লিজের দামও বেড়ে গেছে গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু এত কিছুর পরেও কোন কারণ ছাড়াই তারা এবার আলুর দাম কমিয়ে দিয়েছে। আমরা আলুর দাম নির্ধারণের পরপরই নানাভাবে গিয়ে বিএডিসির কাছে আমাদের নায্য দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু তারা কথা শুনে নি। বিএডিসি কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের দাবি না মেনে নেয় তাহলে আমরা আগামীতে বীজ আলু  উৎপাদন বন্ধ করে দেব। 

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ