
প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৫, ১২:১৮ এএম
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে ‘রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব-২০২৫’ উদযাপিত হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) দিনব্যাপী অন্নদানগর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাঠাগারভিত্তিক সমাজ-সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্র’-এর উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পীরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা। ‘একবিংশ শতকে রবীন্দ্র-নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনায় অংশ নেন গবেষক ও পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এমাদউদ্দীন আহমেদ।
মূল আলোচক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আলোকিত পাঠকের কাছে লেখকের ধর্ম পরিচয় নয়, তার মানবিক দর্শনই মুখ্য। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল উভয়েই ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক-বাহক। হিন্দু-মুসলিম নয়, তাঁদের ভাবতে হবে মানবতাবাদী মনীষা হিসেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি সহনশীল ও অহিংস সমাজ গঠনে রবীন্দ্র-নজরুল চর্চা অপরিহার্য।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ শিক্ষক মো. ইমান আলী এবং সঞ্চালনা করেন কবি ও শিক্ষক কৃষ্ণ কমল বর্মন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মীর রবি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির দুই অদ্বিতীয় স্তম্ভ। তাঁদের সৃষ্টিকর্ম নতুন প্রজন্মের মাঝে মানবিকতা ও উদারতার বীজ বুনতে পারে। তাই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প দূর করতে হলে রবীন্দ্র-নজরুল অধ্যয়ন জরুরি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রবীন্দ্র-নজরুলকে ঘিরে থাকা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার বিপরীতে সত্যিকারের মননচর্চার পরিবেশ গড়ে তুলতেই আমাদের এ উৎসব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অন্নদানগর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনূর ইসলাম।
দিনব্যাপী উৎসবে সেমিনার, আলোচনা সভা, কুইজ, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক পর্বে রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্র, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীবৃন্দ।
প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণ করে স্থানীয় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী। শেষে বিজয়ীদের মাঝে বই ও শিক্ষা সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। বিজয়ীদের মধ্যে ছিলেন, আবৃত্তিতে সীমান্ত কুমার শীল, আশরাফিয়া জান্নাত, রুদ্র শর্মা। উপস্থিত বক্তৃতায় কাওছার হাবীব, সুলতান মাহমুদ, সীমান্ত কুমার শীল। কুইজে নুশরাত জাহান নূপুর, হালিমা আক্তার হ্যাপি ও মাইশা তাসনিম হিনা।
উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করে ক্ষীরোদা রানী শিক্ষা ট্রাস্ট, নবভাবনা ও কম্বিনেশন বিল্ডার্স লিমিটেড।