
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম
খুলনায় অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে চাল ও আটা সরবরাহের লক্ষ্যে সরকার পরিচালিত ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) কার্যক্রম নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে চালু রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডে খাদ্য অধিদপ্তরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর জারি করা এক সরকারি প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে খুলনার ৯৩ জন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করে খাদ্য অধিদপ্তর। ডিলারদের দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া আগেই ২৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগেই অসন্তোষ দেখা দেয় ডিলারদের মধ্যে।
এই প্রেক্ষিতে মোঃ খালিদ হোসেন ও ইমান শেখ হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নং ১৩৫৭৫/২৪) দায়ের করেন। রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের দ্বৈত বেঞ্চ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করেন। এই আদেশ দেশের সকল ওএমএস ডিলারের জন্য প্রযোজ্য বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া আরও ১৫ জন ডিলার পৃথক একটি রিট (নং ১৩৯০৯/২৪) দায়ের করেন, যার প্রেক্ষিতে মাননীয় বিচারপতি মোঃ আকরাম হোসাইন চৌধুরী ও কেএম রাশিদুজ্জামান রাজা তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন। পরবর্তীতে সেই স্থগিতাদেশ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয় এবং সংশ্লিষ্ট ডিলারদের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে, ২ জুন ২০২৫ তারিখে খালিদ হোসেন ও ইমান শেখ আরও একটি সুপ্রিম কোর্টে মতামত আবেদন (স্বারক নং ১৩.০১.০০০০.০০০.২৩০.৫৭.০০০২.২৪.২৪৬৩) দাখিল করেন। সংশ্লিষ্ট দুই ডিলারকে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো বাধা নেই। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও খুলনার জজ কোর্টের ড. মোঃ জাকির হোসেন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বরাবর অনুরূপ মতামত প্রদান করেন।
তবে আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও, খালিদ হোসেন ও ইমান শেখ এখনো কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পাননি। খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, "মহানগরীর ১৬টি ওয়ার্ডে পরিদর্শকদের মাধ্যমে এবং ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে উল্লিখিত দুই ডিলারের বিষয়ে আদালতের রায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী ডিলার খালিদ হোসেন অভিযোগ করেন, জানাগেছে ১ জুলাই থেকে খুলনা খাদ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ৩১টি ওয়ার্ডে ওএমএসের চাল ও আটা চোরাই পথে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে এই দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে পূর্বেও বিভিন্ন পত্রিকায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু অদৃশ্য শক্তির আশীর্বাদে তিনি আজও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।