
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম মীরগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। সুন্দর পরিবেশ ও পাবলিক পরীক্ষার সাফল্যে ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে বিদ্যালয়টি। তবে সম্প্রতি যৌন পীড়নের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণের অভিযোগ উঠেছে এক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন পীড়নের অভিযোগে সহকারী শিক্ষক মোশারফ হোসেন (৪০) গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনার পর গত ৭ আগস্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবিতে মানববন্ধনের ডাক দেন ওই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোনারুল ইসলাম। কিন্তু শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের সাড়া না পেয়ে কর্মসূচি ভেস্তে যায়। পরে ১০ আগস্ট স্থানীয় বাজার থেকে মাইক ভাড়া নিয়ে ১২ আগস্ট ফের মানববন্ধনের ডাক দেন তিনি, কিন্তু এবারও ব্যর্থ হন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে শিক্ষক মোশারফ শিক্ষার্থীর বাবার মোবাইলে ফোন দিয়ে মীরগঞ্জ-সোনারায় সড়কের একটি উঁচু ব্রিজে যেতে বলেন। শিক্ষার্থী খালাতো বোনকে নিয়ে সেখানে গেলে শিক্ষক হাত ধরে টানাটানি করেন বলে অভিযোগ করা হয়। শিক্ষার্থীর চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে এলে তিনি সরে যান। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্থীকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিও ধারণকারীও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শিক্ষক মোশারফ কোনো বিষয়ে শাসন করায় ক্ষোভ থেকে ওই ভিডিও ধারণ করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্যার বাবার মোবাইলে ফোন দিয়েছিলেন, যা আমি ডিলিট করেছি। আমরা দুই বোন মোটরসাইকেলে উঠেছিলাম, তখনই ভিডিও করা হয়। মোশারফ স্যার ভালো পড়ান। খারাপ দৃষ্টিতে তাকান কি না, জানি না।’
অভিযুক্ত শিক্ষক মোশারফ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘আমি এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলাম। পথে দুই শিক্ষার্থী বাইকে উঠতে চাইলে মানবিক কারণে নিয়ে যাই। ভিডিওটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে। স্কুল এলাকায় বখাটেদের উপস্থিতি নিয়ে আগেও কথা বলেছি। হয়তো তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
স্থানীয়দের মতে, একজন শিক্ষক অসৎ উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীর বাবাকে ফোন দেবেন বা প্রকাশ্যে হাত ধরবেন- এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই মানববন্ধনে সাড়া মেলেনি। তাদের দাবি, এ ধরনের প্রচেষ্টা বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করছে, যা বন্ধে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া জরুরি।
যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাবেক শিক্ষার্থী মোনারুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মীরগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ ন ম রুহুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, বিষয়টি আদালতের হাতে। দুঃখজনক হলো, যাকে আমরা পড়িয়েছি ও নানা সহায়তা করেছি, সেই সাবেক শিক্ষার্থীই এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের চেষ্টা করছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’