• ঢাকা শুক্রবার
    ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে গেল প্রবাসীর মরদেহ, কবর খুঁড়েও হলো না দাফন

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩, ০৩:২৬ পিএম

বদলে গেল প্রবাসীর মরদেহ, কবর খুঁড়েও হলো না দাফন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গ্রিসে বসবাসরত সুনামগঞ্জের যুবক আফছর মিয়া (৪০) লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রিসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

আফছরের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর দেশে আসবে আফছরের নিথর দেহ। শেষ দেখা দেখতে পারবেন এমন সান্ত্বনায় হয়ত কিছুটা শক্ত হয়েছিল আফছরের স্বজনদের মন। শুক্রবার (১০ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মরদেহ বাড়িতে আসে। শনিবার (১১ মার্চ) সকালে কফিন খোলার পর তাদের কষ্ট যেন আরও বেড়ে যায়। কফিন খুলতেই দেখা গেল আফছরের পরিবর্তে অন্যজনের মরদেহ এসেছে আফছরের বাড়িতে।

আফছর মিয়া সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপী গ্রামের মৃত জমসিদ আলীর বড় ছেলে। আফছরের পরিবর্তে যে মরদেহটি এসেছে সেটি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার শিলনপুর গ্রামের জালাল মিয়া (৫২) নামের এক ব্যক্তির। তিনিও গ্রিস প্রবাসী ছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আগামী ১৩ মার্চ তার মরদেহ দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভুলবশত আফছর মিয়ার নাম সম্বলিত স্টিকারটি জালাল মিয়ার কফিনে লাগিয়ে দেওয়ার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। আফছর মিয়ার মরদেহ এখনো গ্রিসের এথেন্সে আছে।

এদিকে মরদেহ দেশে আসার খবরে খাটিয়া এনে রাখা হয় আফছর মিয়ার বাড়িতে। মাইকে ঘোষণা করা হয় জানাজার নামাজের সময়সূচি। বাড়িভর্তি শোকার্ত মেহমান। মরদেহ দাফনের জন্য কবর খুঁড়া সম্পন্ন হওয়ার পরও অন্যের মরদেহ আসার কারণে দাফন সম্পন্ন করা যায়নি।

আফছর মিয়ার প্রতিবেশী প্রদীপ বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের আফছরের মারা যাওয়ার খবর শুনি। এরপর শুক্রবার রাতে তার মরদেহ আসার কথা। এজন্য জানাজার নামাজের মাইকিং করা হয়, কবরও খুঁড়া শেষ। তবে আসার পর দেখি আফছরের পরিবর্তে অন্যজনের মরদেহ।

আফছর মিয়ার ছোট ভাই রেজুয়ান বলেন, আমার ভাগনে শুক্রবার ঢাকা বিমানবন্দরে যায়। সেখানে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছায়। শনিবার সকাল ১০টায় জানাজার নামাজের সময় নির্ধারিত হয়। মরদেহ অক্ষত রাখতে জানাজার ১ ঘণ্টা আগে মরদেহবাহী গাড়ি থেকে মরদেহ নামাই। কফিন খোলার পর দেখা যায় মরদেহটি আমার ভাইয়ের নয়। এমন ভুল খুবই মর্মান্তিক। পরে পুলিশে খবর দিলে সন্ধ্যা ৭টায় আবার মরদেহ ফেরত পাঠানো হয়।

শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ফোর্সসহ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে আসি। অনেক চেষ্টা করে মৃত জালাল উদ্দিনের ঠিকানা বের করে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে মরদেহ ফেরত পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আফছর মিয়ার মরদেহ এখনো দেশে আসেনি। আগামী ১৩ মার্চ জালাল মিয়ার কফিনে আফছর মিয়ার মরদেহ দেশে আসার কথা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ