 
              প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৪, ০১:৪৪ পিএম
 
                 
                            
              যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করেছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। ভরাডুবি হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির। সুনাক পরাজয় মেনে নিয়ে স্টারমারকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২০১০ সালের পর আবারও ডাউনিং স্ট্রিটে একজন লেবার প্রধানমন্ত্রী আসতে চলেছেন।
কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো বিশ্ব জেনে যাবে যুক্তরাজ্যের ৬৫০ সংসদীয় আসনের মধ্যে লেবার এবং কনজারভেটিভ পার্টির দখলে কটি করে আসন যাচ্ছে। একবার দেখে নেওয়া যাক লেবার পার্টির নেতা তথা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে চলা কিয়ের স্টারমার আসলে কে?
ভোটের মাঠে লেবার পার্টির এমন সাড়া জাগানো সাফল্যের নায়ক স্যার কিয়ার স্টারমার।
১৯৬২ সালে লন্ডনের অক্সটেডে স্টারমারের জন্ম। ৬১ বছর বয়সি এই রাজনীতিক রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন একজন মানবাধিকার আইনজীবী। তিনি পাবলিক প্রসিকিউশনের ডিরেক্টর এবং ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
যার অর্থ স্টারমার ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সবচেয়ে সিনিয়র প্রসিকিউটর সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন। ২০১৪ সালে তাকে নাইট উপাধি দেওয়া হয়েছিল।
আইনজীবী হিসেবে বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের পর স্টারমার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সংসদ সদস্য হন ৫০ বছর বয়সে। তবে রাজনীতি নিয়ে তার বরাবরই আগ্রহ ছিল। যুবা অবস্থায় তিনি ছিলেন উগ্র বামপন্থি।
পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে স্টারমার বেড়ে উঠেন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের সারে-তে। তাকে শ্রমজীবী শ্রেণির সঙ্গে জীবনের যোগের কথা প্রায়শই বলতে শোনা যায়। তার বাবা একটা কারখানার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক হিসেবে কাজ করতেন এবং মা ছিলেন নার্স।
স্টারমারের পারিবারিক জীবন খুব সুখকর ছিল না, তার বাবা দূরত্ব রেখে চলতেন। দীর্ঘকাল ‘স্টিলস ডিজিজ’ নামক এক ধরনের অটো-ইমিউন ডিজিজে ভুগেছেন তার মা। অসুখের কারণে ধীরে ধীরে হাঁটার এবং কথা বলার ক্ষমতা হারান তার মা। একসময় তার পা কেটে বাদ দিতে হয়েছিল।
স্টারমারের পরিবারও কট্টর লেবার পার্টির সমর্থক ছিল। যার প্রতিফলন পাওয়া যায় তার নামে। স্কটিশ খনি শ্রমিক কিয়ের হার্ডির নাম অনুসারে তার নাম রাখা হয়েছিল। তিনি লেবার পার্টির প্রথম নেতা ছিলেন।
১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির স্থানীয় যুব শাখায় যোগ দেন স্টারমার। কিছু সময়ের জন্য তিনি উগ্র বামপন্থি একটি পত্রিকার সম্পাদনাও করেছিলেন।
স্টারমার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি শিক্ষা লাভ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছেন। লিডস ও অক্সফোর্ডে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ব্যারিস্টার হিসেবে মানবাধিকার নিয়ে কাজও করেছেন। সেই সময় ক্যারিবিয়ান ও আফ্রিকার দেশগুলোতে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির জন্য তিনি কাজ করেন।
২০১৫ সালে স্টারমার প্রথমবার সংসদে যান। লন্ডনের হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের সংসদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কট্টর বাম রাজনীতিবিদ জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে লেবার পার্টি তখন বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে। অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরকারের কার্যকলাপ নজরে রাখার জন্য স্টারমারকে ‘শ্যাডো হোম সেক্রেটারি’ (ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।
স্টারমার একজন বাস্তববাদী মানুষ। যদিও বহু সমালোচকদের মতে, তিনি খুব একটা চৌকস নন। বরং তিনি অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়া একজন রাজনীতিক।
গত অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলি অভিযানকে সমর্থন করেছিলেন স্টারমার। তার এ সিদ্ধান্ত অনেক ফিলিস্তিনপন্থি ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছিল।
তিনি একজন দক্ষ ফুটবলার। ক্লাব ফুটবলে আর্সেনালের ভক্ত তিনি। এই রাজনীতিবিদ নিরামিষভোজী। তিনি ২০০৭ সালে ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।
 
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      