• ঢাকা সোমবার
    ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

‘কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মুসলিম ভারতের সঙ্গে থাকতে চায় না’ 

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০২:৩১ পিএম

‘কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মুসলিম ভারতের সঙ্গে থাকতে চায় না’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বের মূলত কাশ্মীর সংকটকে ঘিরেই এবং সেখানকার ৯৩ শতাংশ মুসলিম ভারতের সঙ্গে থাকতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আয়াজ আহমদ চৌধুরী। 

রোববার (১১ মে) জিও পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

আয়াজ আহমদ চৌধুরী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মানুষ মুসলিম, কিন্তু ১৯৪৭ সালে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই অঞ্চল পাকিস্তানের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

তার মতে, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আবারও প্রমাণ করেছে, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের উচিত বুঝে নেওয়া যে, কাশ্মীরিরা তাদের সঙ্গে থাকতে চায় না। তাদের দমননীতিই সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে।

পাকিস্তানের সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, পাকিস্তানের ‘পরিমিত পাল্টা জবাবে’ ভারতের আতঙ্ক এটা প্রমাণ করে, ন্যায়বিচারের শক্তি এখনো আছে। ভারত যত দ্রুত বাস্তবতা মেনে আলোচনা শুরু করবে, ততই উভয় দেশের মঙ্গল।

এদিকে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ২০১৯ সালে ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটিতে স্বায়ত্তশাসন বিলুপ্ত এবং রাজনৈতিক অধিকার খর্ব হয়েছে। সেই সময় হাজারো রাজনীতিককে গ্রেফতার করা হয়, ইন্টারনেট বন্ধ থাকে মাসের পর মাস, এবং কড়া সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত থাকে।

মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, কাশ্মীরে মানুষের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, গত কয়েকদিনে রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করে যা। 

এমন পরিস্থিতিতে চিরবৈরী দুদেশের মধ্যকার উত্তেজনা থামাতে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। টানা ৪৮ ঘণ্টা আলোচনার পর গত শনিবার (১০ মে) দুদেশকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে সক্ষম হয় দেশটি। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর সংকট থেকে নজর সরিয়ে রাখলে এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

আর্কাইভ