
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
গাজা উপত্যকায় ত্রাণ কার্যক্রমকে ইসরায়েল রাজনৈতিক এবং সামরিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, যা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত বলে জানিয়েছে সেখানে কাজ করা ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা।
অক্সফ্যাম, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস এবং কেয়ার সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যৌথ এক চিঠিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, যেখানে হাজারো মানুষ অভুক্ত আছে, সেখানে ইসরায়েল এটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, দীর্ঘ ৫৩৫ দিন ধরে ইসরায়েল জীবনরক্ষাকারী সহায়তাকে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মানবাধিকারের লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, যুদ্ধাবস্থায় বেসামরিক জনগণের কাছে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছানো বন্ধ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
অক্সফ্যামের মতে, ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যুদ্ধাপরাধ। ইসরায়েল গত মার্চে যে নিবন্ধন নিয়মাবলী ঘোষণা করেছে, তাতে সহায়তা সংস্থাগুলোকে তাদের সম্পূর্ণ দাতা তালিকা এবং ফিলিস্তিনি কর্মীদের নাম যাচাইয়ের জন্য জমা দিতে হবে। সংস্থাগুলো মনে করছে এই নিয়ম তাদের কর্মীদের জন্য বিপজ্জনক এবং ইসরায়েলকে সহায়তা বন্ধ করার ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হবে এতে। বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিরুদ্ধে সহায়তা বিতরণে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে।
স্ফিয়ার অ্যাসোসিয়েশন, যারা মানসম্পন্ন মানবিক সহায়তার জন্য ন্যূনতম মান নির্ধারণ করে, তারা সতর্ক করেছে যে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পদ্ধতি মূল মানবিক নীতি ও মানদণ্ড মেনে চলে না। জাতিসংঘের অবস্থান জাতিসংঘ ইসরায়েলের প্রস্তাবিত সামরিক নিয়ন্ত্রিত সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থাকে সাহায্যকে অস্ত্র বানানোর একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
জাতিসংঘের মতে, এই ধরনের ব্যবস্থা নিরপেক্ষ, নির্দলীয় এবং স্বাধীন সহায়তা প্রদানের মূল নীতিমালার লঙ্ঘন। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং কিছু সহায়তা সংস্থা সীমিতভাবে সহায়তা বিতরণ পুনরায় শুরু করলেও তারা বলছে যে গাজায় প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত ট্রাকের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত।
সহায়তা বিতরণে সম্পূর্ণ স্থবিরতা সহায়তা সংস্থাগুলো বৃহস্পতিবার বলেছে যে, ইসরায়েল গত মার্চে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকে তাদের একটি ট্রাকও গাজায় জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছাতে পারেনি। যেখানে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, জনসংখ্যার সিংহভাগ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, সেখানে সহায়তার বেশিরভাগই বেসামরিক জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। জাতিসংঘের সংস্থা এবং অল্প কয়েকটি সহায়তা সংস্থা সীমিতভাবে সহায়তা বিতরণ পুনরায় শুরু করলেও তারা জানিয়েছে যে গাজায় প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত ট্রাকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা গাজার শতভাগ জনসংখ্যা উচ্চমাত্রার তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখে রয়েছে।
অক্সফ্যামের গাজার সহায়তা কর্মকর্তা বুশরা খালিদি জানিয়েছেন, অক্সফ্যামের ২৫ লাখ ডলারের পণ্য ইসরায়েল আটকে দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সংস্থা কোগাট, যারা গাজায় মানবিক সহায়তার দায়িত্বে রয়েছে, এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ইউরোপীয় কমিশন সম্প্রতি একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় খাদ্য নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।