• ঢাকা বুধবার
    ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২

ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, বাড়ছে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম

ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, বাড়ছে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই দিনের ব্যবধানে ফের ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৫.৫ মাত্রার নতুন কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে রোববার রাতে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় অনেক গ্রাম। এতে ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে এক হাজার চার শতাধিক মানুষের। আহত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি। ধসে পড়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি। নতুন ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ১০ কিলোমিটার গভীরে, যা আগেরটির কাছাকাছি। এর ফলে পাহাড় ধসে অনেক সড়ক বন্ধ হয়ে যায়, ব্যাহত হয় উদ্ধারকাজ। ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের জীবিত বের করে আনা কঠিন হয়ে উঠেছে।

মানবিক সহায়তা সংস্থা আসিলের কর্মী সাফিউল্লাহ নূরজাই বলেন, ‘ভূমিকম্পে নতুন করে আরও অনেকে আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়াল

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি বাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত বা ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়রা ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে এখনও জীবিতদের খুঁজছেন। অনেকেই ধসে পড়া ঘরের নিচে চাপা পড়ে আছেন। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত কিছু ঘর মঙ্গলবারের ভূমিকম্পে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪১১ জন নিহত, ৩ হাজার ১২৪ জন আহত এবং ৫ হাজার ৪০০-এর বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আন্তর্জাতিক শিশু সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জরুরি তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থার পরিচালক সামিরা সাঈদ রহমান বলেন, ‘এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন রক্ষার লড়াই। দূরবর্তী গ্রামগুলো থেকে আহতদের বের করে আনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও আশ্রয় পৌঁছে দেয়া জরুরি।’

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে প্রাণহানি বেড়ে ৬ শতাধিক, আহত ১৫০০ – Probash Time

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় কুনার ও নানগারহার প্রদেশ। দুর্গম গ্রামগুলোতে পৌঁছাতে অ্যাম্বুলেন্সের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। আহতদের উদ্ধার ও ত্রাণ সরবরাহের জন্য হেলিকপ্টারও ব্যবহার করছে তালেবান প্রশাসন।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, হাজারো শিশু বিপদে পড়েছে। সংস্থাটি ওষুধ, গরম কাপড়, তাঁবু, টারপলিন, সাবান, স্যানিটারি প্যাড, তোয়ালে ও পানির বালতি পাঠানো শুরু করেছে।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। আফটারশকের আতঙ্কে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

আসিলের নূরজাই বলেন, ‘মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় তারা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে, আর পরবর্তী আফটারশকের আতঙ্ক তাদের আরও দুর্ভোগে ফেলছে। খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য এখনই জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।’

আর্কাইভ