• ঢাকা সোমবার
    ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২
৬ দিনের এশিয়া সফর

আসিয়ানে নজর কাড়লেন ট্রাম্প, চীনের সঙ্গে চুক্তির প্রত্যাশা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ১১:২৪ এএম

আসিয়ানে নজর কাড়লেন ট্রাম্প, চীনের সঙ্গে চুক্তির প্রত্যাশা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়ায় ছয় দিনের সফর শুরু করেছেন। গতকাল রোববার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ৪৭তম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান নেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। শুধু যোগ দেওয়া নয়, তিনি সম্মেলনের শিরোনাম, বাণিজ্য চুক্তি এবং থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিজেই তত্ত্বাবধান করেন।

এর আগে তিনি যখন মালয়েশিয়ায় অবতরণ করেন, তখন লাল গালিচায় শিল্পীদের সঙ্গে নাচেন। তবে ট্রাম্পের আগমনে মালয়েশিয়ায় বিক্ষোভও হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা গাজায় ইসরায়েলের হামলার জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করে তাঁর সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের এই সফরের লক্ষ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য নিয়ে দূরত্ব কমিয়ে আনা।

রয়টার্স জানায়, আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামের (এপেক) সম্মেলনে চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনা কমানো। বিশেষ করে বিরল খনিজের ওপর চীনের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পণ্যের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের মার্কিন হুমকি এখনও রয়ে গেছে। বিষয়টি সুরাহা করতে একটি বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্য রয়েছে।

আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলেন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতারা ট্রাম্পের উপস্থিতিতে একটি বর্ধিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। থাই প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট তিন মাস আগে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির ওপর ভিত্তি করে স্থায়ী শান্তির জন্য ট্রাম্পের উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। গত জুলাই মাসে ট্রাম্প থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে পাঁচ দিনের সংঘাতের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতায় সহায়তা করেছিলেন। সম্মেলনে পূর্ব তিমুরকে আসিয়ানের সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে।

আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা এড়াতেই এই আলোচনা। মার্কিন আলোচকরা বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠকের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এই বৈঠক করা হলো। এ সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছি।’ আর চীনের আলোচকরা বলেন, দুই দেশ বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। মালয়েশিয়ায় অবতরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পর্কিত চুক্তিসহ চারটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, রপ্তানিকারকদের একে অপরের বাজারে প্রবেশাধিকার দিতে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘাতের ‘খুব দ্রুত সমাধান’ করার আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প। আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে সীমান্ত বিরোধের বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে ‘মহান মানুষ’ বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার প্রশাসন মাত্র আট মাসের মধ্যে আটটি যুদ্ধ শেষ করেছে। আমরা গড়ে প্রতি মাসে একটি করছি। আমি শুনেছি, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান যুদ্ধ শুরু করেছে। আমি খুব দ্রুত এটিও সমাধান করব।’

এশিয়া সফরে যা করবেন ট্রাম্প

আলজাজিরা জানায়, আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে ট্রাম্প আজ জাপানের টোকিও যাবেন। সেখানে তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী সানা তাকাইচির সঙ্গে বৈঠক করবেন। জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গেও দেখার করার কথা রয়েছে তাঁর। তাছাড়া দেশটির ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং মার্কিন সেনাদের সঙ্গে সময় দেবেন। ২৯ অক্টোবর ট্রাম্প এপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন। এই সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বহুলপ্রত্যাশিত বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। 

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ