• ঢাকা রবিবার
    ০২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২

সুদানে ভয়াবহ গণহত্যা, আকাশ থেকেও দেখা যায় রক্তের দাগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম

সুদানে ভয়াবহ গণহত্যা, আকাশ থেকেও দেখা যায় রক্তের দাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সুদানের দারফুর অঞ্চলে প্যারামিলিটারি বাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিত গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল)। স্যাটেলাইটের ছবি, ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যেখানে বহু স্থানে রক্ত ও মরদেহের উপস্থিতি ‘মহাকাশ থেকেও দৃশ্যমান’। খবর  এবিসি নিউজের। 

এইচআরএল জানিয়েছে, তারা দারফুর অঞ্চলে এমন বহু জায়গা চিহ্নিত করেছে যেখানে মাটির রং লালচে হয়ে গেছে। এই লালচে রং রক্ত ও মরদেহের উপস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এসব স্থান বিশেষ করে হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা এবং সুদানের সরকারি সেনাবাহিনী (এসএএফ)-এর ঘাঁটির আশেপাশে দেখা গেছে।

এইচআরএল-এর মানবাধিকার গবেষক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড এবিসি নিউজকে বলেন, র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তারা হাজার হাজার বস্তু দেখতে পান, যার দৈর্ঘ্য, আকৃতি ও বর্ণ মাটিতে পড়ে থাকা মরদেহের সঙ্গে মিলে যায়।

রেমন্ডের ভাষ্যমতে, দারজা উলা নামে এক এলাকায় আরএসএফ বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরুষদের আলাদা করে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, “আমরা এমন দৃশ্য দেখেছি, যেখানে প্রথম দিন আটক ব্যক্তিদের সারি দেখা গেছে, আর পরদিন একই স্থানে রক্তমাখা মরদেহের স্তূপ।”

এইচআরএল আরও জানিয়েছে, আল-ফাশের শহরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে হাসপাতাল ও সামরিক স্থাপনার কাছে অন্তত কয়েক ডজন এমন ক্লাস্টার বা গুচ্ছ দেখা গেছে, যেখানে রক্তের দাগসহ মরদেহ ছড়িয়ে আছে।

স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, আরএসএফ ঘাঁটির আশপাশের সব যানবাহন একসঙ্গে স্থান ত্যাগ করেছে, যা সরকারি বাহিনী পালিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রাখার সমঝোতার ইঙ্গিত দেয় বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। জাতিসংঘ আল-ফাশেরকে দুঃসহ কষ্টের কেন্দ্রবিন্দু বলে উল্লেখ করেছে।

এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছিল, আরএসএফ বাহিনী দারফুরে গণহত্যা চালিয়েছে। ইয়েলের গবেষক রেমন্ড সতর্ক করে বলেন, দুই দশক আগে শুরু হওয়া দারফুর গণহত্যার চূড়ান্ত পর্ব এখন প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে এবং যারা পালাতে পারেনি—বিশেষ করে নারী ও শিশুরা—তারাই এখন পরবর্তী লক্ষ্য।
 

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ