• ঢাকা শনিবার
    ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জমি দখল ছিল সাবেক এমপি আউয়ালের নেশা!

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২১, ১০:০০ পিএম

জমি দখল ছিল সাবেক এমপি আউয়ালের নেশা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তরিকত ফেডারেশনের সাবেক সংসদ সদস্য লক্ষ্মীপুর- আসনের সংসদ সদস্য এম আউয়ালের নেশা হয়ে উঠেছিল অন্যের জমি দখল করা। চার দিন রিমান্ডের প্রথম দিনে এমন তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সূত্র বলছে, ‘জমি দখলে বাধা দেয়ায় শাহীন উদ্দিনকে হত্যাসহ আরো দুটি হত্যা করিয়েছিলেন সাবেক এই এমপি।

পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের বুড়িরটেক আলীনগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করেছেন সাবেক এমপি আউয়াল। এলাকায় নিজের আধিপত্য বিস্তারেআউয়াল বাহিনীগড়ে তুলেছিলেন। জমি দখলই ছিল তার বাহিনীর মূল কাজ। কাজে বাধা এলে খুন করতেও দ্বিধা করত না। কারো সঙ্গে ছোটখাটো বিষয়ের বিরোধেও তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মিরপুরের বঙ্গবন্ধু কলেজের ছাত্র চঞ্চল পল্লবীর মোমিনকে হত্যা করা হয়। এই হত্যার পেছনেও আউয়ালের হাত আছে। ছাড়া আরো একজনকে গুম করা হয়েছে। তাকেও আউয়ালের ইশারায় গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

 স্থানীয় এক বাড়িওয়ালা আবদুস শহীদ বলেন, আমাকে গাঁজা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে আউয়ালের লোকজন। অথচ আমি কখনো এসব ব্যবসা তো দূরের কথা, নিজে কখনও খাইনি। আউয়াল বাহিনী আমার জমি দখল করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাধার মুখে সেটা সম্ভব হয়নি। পরে আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।

ছালেহা বেগম নামে একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমার জমি কিনেছেন এম আউয়াল। চেকও দিয়েছেন। কিন্তু চেক জমা দিলে ব্যাংক থেকে বলেছে অ্যাকাউন্টে এক টাকাও নেই। আউয়াল আমার জমি এভাবেই দখলে নিয়েছে। আমার জমি তো ফেরত দেয়নি, টাকাও দেয়নি। 

বুড়িরটেক আলিনগরের বাসিন্দারা বলেন, একাধিক ভুক্তভোগী আউয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা জিডি করেছে। কিন্তু পুলিশ আউয়ালের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ যদি আউয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করত তাহলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটত না।

মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাহাতাব উদ্দিন বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আউয়ালের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আগে তার বিরুদ্ধে কনো মামলা আছে কি না তা জানা নেই।

তার বিরুদ্ধে থানা পুলিশ আগে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি? এমন প্রশ্নে উপকমিশনার মাহাতাব বলেন, থানা পুলিশ আগে কেন ব্যবস্থা নেয়নি, তা আমি বলতে পারব না। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাব। অবশ্যই তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ১৬ মে বিকেলে পল্লবী ১২ নম্বর সেকশনের ৩১ নম্বর সড়কে সাহিনুদ্দীন (৩৪) নামে এক ব্যক্তিকে তার শিশুসন্তানের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের মা পল্লবী থানায় ২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি এম আউয়াল।

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, পল্লবীর বুড়িরটেক আলীনগর এলাকায় তাদের প্রায় ১০ একর জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করছিলেন সাবেক এমপি এম আউয়াল। এর জের ধরেই সাহিনুদ্দীনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার ঘটনায় মানিক নামে একজন হত্যাকারী ্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। সাবেক এমপি আউয়াল পুলিশি রিমান্ডে আছেন।

এলআই/জেডসি/এম. জামান

আর্কাইভ