• ঢাকা সোমবার
    ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩, ১০:০৬ পিএম

ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

স্মৃতির শহীদ মিনারে আপামর জনতার ভিড়।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সর্বস্তরের মানুষের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ভাষা শহীদেরা। ফুল হাতে স্মৃতির মিনারে জড়ো হয়েছেন আপামর জনতা। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রদ্ধায় ফুলে ভরে উঠেছে শহীদ বেদি। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনসহ শপথ নেন একুশের চেতনা বাস্তবায়নের।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় জানান অনেকে।
রক্তের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। সেই স্পর্ধা দেখানোর সাধ্যই বা আছে কার? তবু প্রতিবছর ফিরে আসা এ দিনটিতে শ্রদ্ধাবনত হয়ে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে জাতি।
রাতের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা জানানোর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার খুলে দেয়া হয় সর্বস্তরের মানুষের জন্য। মুহূর্তেই ঢল নামে লাখো মানুষের। কানায় কানায় ভরে ওঠে স্মৃতির মিনার। খালি পায়ে, হাতে ফুল আর পোশাকে শোভা পায় ভাই হারানোর শোক।

]
একুশ বাঙালিকে গেঁথেছে এক অবিনাশী সূত্রে। দিয়েছে আত্মপরিচয়। জাতীয়তাবাদের সন্ধান। সেই সূত্র ধরেই ছয় দফা, ঊনত্তর, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। তাইতো আবেগটাই যেন একটু বেশি। ভালোবাসা নিবেদনের পর্বটাও একটু আলাদা।
সময় গড়ায় বাড়ে মানুষ। বাড়ে শ্রদ্ধার ফুল। মানুষের সেই ঢলে যেমন ছিলেন প্রবীণরাও তেমনি ছিল আগামীর দেশ গড়ার কাণ্ডারি শিশু কিশোররা। এই প্রচেষ্টা একুশের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়ার। ভালোবাসার সূত্রে গেঁথে রাখার।
একুশ শুধু বাংলাদেশের নয়, বাঙালির নয়। একুশ আজ সমস্ত বিশ্বের। সমস্ত জাতির। আর তাই একুশের টান উপেক্ষার সাধ্য হয়নি ভিন্ন ভাষাভাষীদেরও। ওপার বাংলা এপার বাংলাও মিলেছে একই টানে।
একুশ উদ্‌যাপনের ক্ষণে আত্মসমালোচনাও বাদ পড়েনি। নানা অতৃপ্তি আর হতাশা স্মরণ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলা গড়ার পাশাপাশি সর্বস্তরে বাংলা প্রচলণের প্রত্যয় জানান সবাই।
ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ভাষার বিকৃতি প্রতিরোধ এবং প্রমিথ ভাষা ব্যবহার সব কিছুই মূলত বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষাকে সমাদৃত করবে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রকাশিত সব রায় বাংলায় অনুবাদ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি রায় যাতে অনুবাদ করা যায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নতুন একটি প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি, বিচারপ্রার্থী শুধু একটি ক্লিকের মাধ্যমে রায় অনুবাদ করে পড়তে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘ভাষা অনুবাদে সুপ্রিম কোর্টে নতুন একটি প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে, সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা যে রায়গুলো ইতোমধ্যে লিখেছেন সেগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুবাদ করা হয়, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’
প্রধান বিচারপতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আসুন, আমরা যে আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাকে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছি, সেই বাংলাদেশকে সবাই মিলে এগিয়ে নিয়ে যাই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের বিচার ব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে।’
শুধু উদ্‌যাপন আর শোক প্রকাশই নয়, একুশ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মর্মে, সবার কর্মে।

 

আরিয়ানএস/এএল

আর্কাইভ